গ্রেপ্তার এড়াতে ড্রেনে লুকিয়ে থাকা সু’কে নিয়ে নতুন তথ্য প্রকাশ

সু হাইজিন
ছবি: দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া

সিঙ্গাপুরে সম্প্রতি মানি লন্ডারিং–বিরোধী অভিযান চলার সময় গ্রেপ্তার এড়াতে বাংলোর বারান্দা থেকে নিচে লাফিয়ে পড়েছিলেন সু হাইজিন নামের এক ব্যক্তি। এরপর ড্রেনে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তার এড়াতে পারেননি তিনি।

সিঙ্গাপুরের ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড করপোরেট রেগুলেটরি অথোরিটি (এসিআরএ) সু হাইজিন সম্পর্কে আরও কিছু নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে।

তদন্তে তারা জানতে পেরেছে, সাইপ্রাসের এই নাগরিক সিঙ্গাপুরের রেস্তোরাঁ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান নো সাইনবোর্ড হোল্ডিংসের পরিচালক ছিলেন। ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বপালন করেছেন।

আরও পড়ুন

গত বছরের অক্টোবরে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ২০২১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা আছে, প্রতিষ্ঠানটিতে সুর ২০ শতাংশ শেয়ার আছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পরিচালক পদ থেকে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন।

নো সাইনবোর্ড হোল্ডিংসের মুখপাত্র গতকাল বৃহস্পতিবার দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে বলেছেন, সু ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ছিলেন। তিনি নির্বাহী দলে ছিলেন না।

এ ছাড়া সু ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ও কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। কার্যনির্বাহী বোর্ডের কোনো বৈঠক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তিনি অংশ নিতেন না। মুখপাত্র আরও বলেন, কোম্পানিতে ওই সময় আরও পাঁচজন পরিচালক ছিলেন।

বিদেশ থেকে পাচার করে আনা অর্থসম্পদ জব্দে গত মঙ্গলবার বড় অভিযান চালিয়েছে সিঙ্গাপুর পুলিশ ফোর্স (এসপিএফ)। এই অভিযানকে দেশটির ইতিহাসে মানি লন্ডারিং–বিরোধী সবচেয়ে বড় অভিযানগুলোর একটি বলা হচ্ছে। গ্রেপ্তার হওয়া ১০ বিদেশি নাগরিককে গত বুধবার আদালতে তোলা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, জালিয়াতি ও গ্রেপ্তার এড়াতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁদেরই একজন সু হাইজিন।

আরও পড়ুন

গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হওয়া এসব বিদেশি নাগরিকের বয়স ৩১ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে তিনজন চীনা নাগরিক। অপর সাতজনের মধ্যে তিনজন কম্বোডিয়ার একজন সাইপ্রাস, একজন ভানুয়াতু এবং একজন তুরস্কের নাগরিক। এই ১০ বিদেশির কারও সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব নেই। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁদের একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।

সু হাইজিন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইকিনহাই ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক এবং শেয়ারহোল্ডার ছিলেন। মুঠোফোনের পরিবেশক ডেইলি গ্লোরি ইন্টারন্যাশনালেও তিনি একই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি সিঙ্গাপুরের ইওয়ার্ট পার্ক এলাকার একটি বাংলোতে থাকতেন। মঙ্গলবার গ্রেপ্তার এড়াতে বাংলার বারান্দা থেকে লাফ দেওয়ায় তিনি হাত ও পায়ে আঘাত পেয়েছেন।

বুধবার আদালতে শুনানি চলার সময় সু দাবি করেছেন, দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনে তিনি ভেবেছিলেন, তাঁকে হত্যা করতে চাওয়া মানুষদের কেউ এসেছে। এ জন্য তিনি লাফ দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, দুবাইয়ে এক নারীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এই নারীর স্বামী তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন।

সু হাইজিনের বিরুদ্ধে আগামী সপ্তাহে আবারও শুনানি হবে।