জান্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধা চীন–রাশিয়া, ইইউর অভিযোগ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিদেশনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল
ছবি: রয়টার্স

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে, নিজ দেশের জনগণরর ওপর মিয়ানমারের সামরিক জান্তার রক্তক্ষয়ী দমন–পীড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্তর্জাতিক পদক্ষেপে বাধা দিচ্ছে চীন ও রাশিয়া। এ দুটি দেশের বাধার কারণে জান্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাচ্ছে না। আজ রোববার ইইউর বিদেশনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল ব্লগ পোস্টে এ মন্তব্য করেছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের জান্তার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ চীন ও রাশিয়া আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ জোসেফ বোরেলের। তিনি লেখেন, ‘মিয়ানমারের ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া আমাদের দায়িত্ব।’

আরও পড়ুন

১ ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে বিক্ষোভে উত্তাল রয়েছে মিয়ানমারের রাজপথ। জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের দাবি, সেনাশাসন প্রত্যাহার করতে হবে ও অং সান সু চিকে মুক্তি দিতে হবে। বিক্ষোভ দমাতে চরম শক্তি প্রয়োগ করেছে জান্তা। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভে জান্তা সেনা–পুলিশের গুলিতে শিশুসহ সাত শতাধিক নিরস্ত্র বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে অধিকার সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)।

গত শুক্রবার রাত থেকে দেশটির বাগো শহরে সেনা–বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক শহরেই নিহত হয়েছেন অন্তত ৮২ জন। নিন্দা জানিয়ে জোসেফ বোরেল ব্লগে লিখেছেন, সেনাবাহিনী নিজেদের জনগণের ওপর নৃসংশতা চালাচ্ছে। বিশ্ববাসী এ ভয়াবহতা দেখছে।

রয়টার্স বলছে, মিয়ানমারের জান্তাকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে চীন। এরপরই রাশিয়ার অবস্থান। গত সপ্তাহে নিরাপত্তা পরিষদ সু চিসহ রাজবন্দীদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে। তবে অভ্যুত্থানের নিন্দাপ্রস্তাব আটকে দিয়েছে চীন ও রাশিয়া।

আরও পড়ুন

এদিকে অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার দায়ে জান্তাপ্রধান, মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ ১১ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে একমত হয়েছেন ইউরোপীয় নেতারা। মিয়ানমারের এসব সেনা কর্মকর্তা ও কোম্পানির বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইইউ, জানিয়েছেন জোসেফ বোরেল। তিনি আরও বলেন, সেনাশাসন প্রত্যাহার করে মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হলে ইইউর পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক সহায়তা পাবে দেশটি। মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করা হবে। দেশটির টেকসই উন্নয়নে বিনিয়োগ করা হবে। আর তা না হলে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়বে মিয়ানমার।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো মিয়ানমারে সব মিলিয়ে ৭০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। একই সময়ে মিয়ানমারে চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।

আরও পড়ুন