দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে মিয়ানমারের অর্ধেক মানুষ: জাতিসংঘ

সংখ্যালঘু কারেন জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর লড়াইয়ে অনেক মানুষ থাইল্যান্ডে পালিয়ে গেছেন। ২৯ এপ্রিল, থাইল্যান্ডের মায়ে হং সন প্রদেশের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে
ছবি: রয়টার্স

আগামী বছরের মধ্যে মিয়ানমারের প্রায় অর্ধেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারেন বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ। একদিকে করোনা মহামারি, অন্যদিকে সেনা অভ্যুত্থানের জের ধরে চলমান রাজনৈতিক সংকট—এসব কারণে দেশটির মানুষকে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়তে হতে পারে বলে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) আজ শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০২২ সালের শুরুর দিকেই মিয়ানমারের প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারেন, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।

এ বিষয়ে ইউএনডিপির প্রশাসক আচিম স্টেইনার বলেন, ২০০৫ সালের পর থেকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে অনেকটা উন্নতি করেছিল মিয়ানমার। দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে এনেছিল দেশটি। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সেই অর্জনের পথে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয় না হলে দেশটি দারিদ্র্যের দিকে আবার ফিরে যাবে।

করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। গত নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের ফল প্রত্যাখান করে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান ঘটায় দেশটির সেনাবাহিনী। আটক করা হয় অং সান সু চিসহ বেসামরিক সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের।

আরও পড়ুন

এরপর থেকে প্রায় তিন মাস ধরে মিয়ানমারে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি সুষ্পষ্ট—সেনাশাসন প্রত্যাহার ও সু চির মুক্তি। বিক্ষোভ দমাতে চরম শক্তি প্রয়োগ করেছে দেশটির জান্তা সরকার। এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে জান্তা সেনা-পুলিশের গুলিতে ৭৫০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ নিহতের খবর দিয়েছে অধিকার সংগঠন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)।

বিক্ষোভ দমনের নামে গুলি-হত্যায় মিয়ানমার দীর্ঘমেয়াদি রক্তপাতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে আগেই সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ। দেশটির সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই হচ্ছে সেনাবাহিনীর। দেশটিতে ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে ছায়া সরকার। নিরাপত্তার জন্য অনেক বেসামরিক মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডসহ প্রতিবেশী দেশগুলোয় পাড়ি জমাতে শুরু করেছেন। সব মিলিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন মিয়ানমারের মানুষ। এর মধ্যেই দেশটির প্রায় অর্ধেক মানুষের দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানাল জাতিসংঘ।

আরও পড়ুন