দুই বছর পর নির্বাচনের কথা বললেন মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান

মিয়ানমারের জান্তা শাসক মিন অং হ্লাইং।
ফাইল ছবি: রয়টার্স

আরও দুই বছর পর মিয়ানমারে বহুদলীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির জান্তাশাসক মিন অং হ্লাইং। মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির দলকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের ছয় মাস পর আজ রোববার এই ঘোষণা দিলেন মিন অং হ্লাইং। খবর রয়টার্সের।

পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) মনোনীত যেকোনো বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে তাঁর সরকার কাজ করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি।

টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মিন অং হ্লাইং বলেন, মিয়ানমারে আসিয়ানের বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে সংলাপে বসতেও রাজি তাঁরা। ভাষণে মিন অং হ্লাইং মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কথা বলেন।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের অগাস্ট নাগাদ দেশে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করবেন। একই সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

মিয়ানমারে জান্তা ও বিরোধীদের মধ্যে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে একজন বিশেষ প্রতিনিধি চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে আসিয়ান। এ লক্ষ্যে আগামীকাল সোমবার বৈঠকে বসছেন আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের ছয় মাস হতে চলেছে। দেশটিতে চলছে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। এতে অচল হয়ে পড়েছে দেশটির সরকারি ও বেসরকারি খাতগুলো। গতকাল শনিবারও রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে মিয়ানমারের পরিস্থিতি এ মুহূর্তে স্থিতিশীল আছে বলে উল্লেখ করেছেন মিন অং হ্লাইং। তিনি বলেছেন, দেশে ‘কিছু সন্ত্রাসী হামলা’ ছাড়া আর কোনো সমস্যা নেই।

চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসে সামরিক জান্তা। তারা সু চির বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনে। তবে ওই অভিযোগ নাকচ করে দেয় মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকে দেশটিতে শুরু হয় সামরিক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ।

গতকাল নিউইয়র্কভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে জানায়, মিয়ানমারের সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মানুষের ওপর সশস্ত্র দমন-পীড়ন চালাচ্ছে জান্তা। আটক বিরোধীপক্ষের ওপর চালানো হয়েছে নির্যাতন। অনেককে হত্যা করা হয়েছে, যা মানবতাসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে ভিন্নমতাদর্শ দমন করতে ৯৩৯ জনকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ এনেছে দ্য অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস। এ ছাড়া ৬ হাজার ৯৯০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।