‘শান্তির ফর্মুলা’ বাস্তবায়নে ভারতের সাহায্য চাইলেন জেলেনস্কি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (ডানে)
ফাইল ছবি: রয়টার্স

‘শান্তির ফর্মুলা তথা শান্তি পদ্ধতি’ বাস্তবায়নে ভারতের সাহায্য চেয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গতকাল সোমবার ফোনালাপে এই সাহায্য চান তিনি। খবর আল-জাজিরার 

এমন সময় দুই নেতার মধ্যে এ আলোচনা হলো, যখন রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছে ভারত। একই সময় রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থায়নের সামর্থ্য সীমিত করতে নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে পশ্চিমা দেশগুলো। 

টুইটারে জেলেনস্কি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়েছে। জি-২০ জোটের সভাপতি হিসেবে দেশটির সাফল্য কামনা করেছি। আমি এই প্ল্যাটফর্মেই শান্তি পদ্ধতি ঘোষণা করেছিলাম। এখন আমি সেই শান্তি পদ্ধতি বাস্তবায়নে ভারতের অংশগ্রহণের ওপর নির্ভর করছি।’ 

বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির প্রথম সারির ২০টি দেশের জোট জি-২০। এই জোটের গত মাসের শীর্ষ সম্মেলনে যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের ১০ দফা শান্তি পদ্ধতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলেন জেলেনস্কি। এক বছরের জন্য এই জোটের সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছে ভারত। 

জেলেনস্কির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির ফোনালাপের বিষয়ে ভারত সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন দুই নেতা। এতে বলা হয়, ‘খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো নিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদ্বেগ তুলে ধরাসহ ভারতের জি-২০ এর সভাপতিত্বের মূল অগ্রাধিকারগুলো ব্যাখ্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।’ 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইউক্রেন সংঘাত অবিলম্বে অবসানে নরেন্দ্র মোদি তাঁর অবস্থান ‘দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত’ করেছেন। যেকোনো শান্তি প্রচেষ্টার প্রতি ভারতের সমর্থন থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলার সরাসরি নিন্দা জানায়নি ভারত। চীনের পর রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। 

রাশিয়ার জ্বালানি পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। এই খাত থেকেই রাশিয়ার সবচেয়ে বেশি আর্থিক সংস্থান হয়। চলতি মাসে প্রতি ব্যারেলের দাম ৬০ ডলারের কমে রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ তেল কেনে ভারত। রাশিয়ার তেলের সর্বোচ্চ এই দাম বেঁধে দেওয়া নিয়ে একমত হয়েছে পশ্চিমারা। 

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, প্রচুর জ্বালানি চাহিদা থাকায় এবং আয়সীমা তেমন বেশি না হওয়ায় একটি দেশকে নিজের স্বার্থ দেখতে হয়। রাশিয়াকে তিনি ‘অবিচল ও সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অংশীদার’ বলেও অভিহিত করেন। 

আরও পড়ুন

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাড়ি, উড়োজাহাজ ও ট্রেনের যন্ত্রাংশসহ আমদানির জন্য ভারতকে পাঁচ শতাধিক পণ্যের একটি তালিকা দিয়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাত সচল রাখার ক্ষেত্রে রাশিয়ার সক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে সীমিত করেছে। 

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রাশিয়ার বাজারে প্রবেশাধিকার চেয়ে ভারতও বিভিন্ন পণ্যের একটি তালিকা মস্কোকে পাঠিয়েছে। নয়াদিল্লি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছে যা বর্তমানে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে আছে।

আরও পড়ুন