স্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তের বিস্তারিত প্রকাশ করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন ঋষি সুনাক

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও স্ত্রী অক্ষতা মূর্তি
ছবি: এএফপি ফাইল ছবি

স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের তদন্ত চলাকালে এ–সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের স্ট্যান্ডার্ডস কমিটি এমন মতামত জানিয়েছে। তবে তারা বলছে, সুনাক অসাবধানতাবশত কাজটি করেছেন।

একটি শিশুযত্ন–বিষয়ক কোম্পানিতে অক্ষতার আর্থিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে যথাযথভাবে তথ্য প্রকাশে সুনাকের ব্যর্থতা নিয়ে পার্লামেন্টের তদন্ত চলছে। সে তদন্তের বিস্তারিত তথ্য সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ করে দিয়েছে ডাউনিং স্ট্রিট।

হাউস অব কমন্সের স্ট্যান্ডার্ডস কমিটি মনে করে, তদন্তের যতটুকু তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলাটা ঠিক হয়নি, তবে তাদের দৃষ্টিতে এটি ছোটখাটো এবং অসাবধানতাবশত আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা।
তদন্তে দেখা গেছে, শিশুযত্ন–বিষয়ক সংস্থায় অক্ষতা মূর্তির স্বার্থসংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো যথাযথভাবে প্রকাশে সুনাক ব্যর্থ হয়েছেন।

আগস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে পার্লামেন্টারি কমিশনার ফর স্ট্যান্ডার্ডস–এর ড্যানিয়েল গ্রিনবার্গ বলেছেন, সুনাক অসাবধানতাবশত কাজটি করেছেন। আচরণবিধি নিয়ে বিভ্রান্তি থেকে এমনটা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির অভিমত মেনে নিয়েছেন সুনাক। তিনি ইতিমধ্যে ক্ষমা চেয়েছেন।
ড্যানিয়েল গ্রিনবার্গের তদন্তে দেখা গেছে, সুনাক পার্লামেন্ট সদস্যদের জন্য নির্ধারিত আচরণবিধির ১৩ ধারাটি লঙ্ঘন করেছেন। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্যদের আচরণবিধির ১৩ ধারায় বলা আছে, পার্লামেন্টারি কমিশনার ফর স্ট্যান্ডার্ডসের কোনো তদন্তের বিস্তারিত তথ্য পার্লামেন্ট সদস্যরা প্রকাশ করতে পারবেন না। শুধু আইনি প্রয়োজনে কিংবা কমিশনারের অনুমোদন নিয়ে তা প্রকাশ করা যাবে।

বিধি লঙ্ঘনের এ ঘটনার মাত্রা বিবেচনা করে অবশ্য ঋষি সুনাকের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করেনি স্ট্যান্ডার্ডস কমিটি।

তবে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্লামেন্টারি কমিশনার ফর স্ট্যান্ডার্ডসের অনুমতি ছাড়া তদন্তাধীন কোনো বিষয় নিয়ে সুনাকের কার্যালয় থেকে বিস্তারিত কথা বলা উচিত হয়নি। কমিশনার পরিষ্কার করে বলেছেন, এতে তদন্তের ওপর প্রভাব পড়বে না। তবে এর মধ্য দিয়ে আচরণবিধির লঙ্ঘন হয়েছে, যা ঠিক হয়নি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী (ঋষি সুনাক) এবং সব মন্ত্রী ও এমপির দায়িত্ব হলো এ ধরনের বিধি লঙ্ঘনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে বিষয় নিশ্চিত করা।

অক্ষতা মূর্তির সম্পদ ও তাঁর বাইরের কার্যক্রম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছিল। তাঁর স্ত্রী অক্ষতা শিশুযত্নসংক্রান্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগের চার বছর পর গত এপ্রিলে সে তথ্য সামনে আনেন সুনাক। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কমিশনার ফর স্ট্যান্ডার্ডস ড্যানিয়েল গ্রিনবার্গ ১৩ এপ্রিল এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেন।

আরও পড়ুন

সুনাক ওই কোম্পানিতে তাঁর স্ত্রীর অংশীদারত্বের কথা সঠিকভাবে ঘোষণা করেছিলেন কি না এবং সরকারের ঘোষিত নতুন বাজেট নীতিতে তাঁর স্ত্রী ব্যবসায়িক সুবিধা পাচ্ছেন কি না, এসবই খতিয়ে দেখা শুরু হয়। কোম্পানির রেকর্ড অনুযায়ী, ২০১৯ সালে অক্ষতা ওই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলেও গত চার বছর তা দেখানো হয়নি।