ইউক্রেনে কেন একসঙ্গে চার বিদেশি নেতা
ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান তৃতীয় বছরে গড়িয়েছে আজ শনিবার। এদিন ইউক্রেনের প্রতি সংহতি জানাতে কিয়েভ সফর করেছেন চার বিদেশি নেতা। রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেন যখন অনেকটা বিপর্যস্ত অবস্থায়, তখন দেশটির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন তাঁরা।
আজ কিয়েভ সফর করেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রো ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন। পরে সেখানকার হোস্তোমেল বিমানবন্দরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে হোস্তোমেল বিমানবন্দরকে রাশিয়ার পরাজয় ও ইউক্রেনের গৌরবের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন জর্জিয়া মেলোনি। আর জাস্টিন ট্রুডো বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিশ্চিত ছিলেন, তিনি এই বিমানবন্দর সহজে দখল করতে পারবেন। তবে আজ দেখা যাচ্ছে, তিনি ভুল ছিলেন।
এ সময় উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, ‘কিয়েভ এখনো শিরদাঁড়া শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। আপনারা পুতিনের পথ আটকে দাঁড়ানোর সাহস দেখিয়েছেন। পালিয়ে যাননি। ইউক্রেনীয় বীরদের ছোট একটি দল হামলাকারীদের ঠেকিয়ে দিয়েছিল। তাঁরা শেষনিশ্বাস ও বন্দুক শেষ গুলি থাকা পর্যন্ত লড়েছিলেন।’
যুদ্ধের দুই বছর শেষে ইউক্রেন বিজয়ের দিকে ৭৩০ দিন এগিয়েছে বলে মন্তব্য করেন জেলেনস্কি। ইউক্রেনীয়দের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘লড়াই চালিয়ে যান, আপনারা নিশ্চিতভাবে জিতবেন।’
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। দ্রুত দেশটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার লক্ষ্য থাকলেও প্রথমদিকে ইউক্রেনীয়দের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়ে রুশ বাহিনী। তবে ধীরে ধীরে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে তারা। বর্তমানে ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ এলাকা রুশ বাহিনীর দখলে রয়েছে। সম্প্রতি দেশটির পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর আভদিভকা দখলে নেন রুশ সেনারা।
বিদেশি সহায়তায় টান, অস্ত্রের ঘাটতি ও রাশিয়ার অগ্রগতিসহ নানা সমস্যার মুখে রয়েছে ইউক্রেন বাহিনী। এরই মধ্যে নিয়মিত তাদের ওপর হামলা হচ্ছে। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটির ওদেসা, নিপ্রোসহ বিভিন্ন অঞ্চলে রাশিয়া ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন।
এদিকে ইউক্রেনের সামরিক সূত্র বলেছে, স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার রাশিয়ার রস্তোফ-অন-ডন ও ক্রাসনোদর শহরের মধ্যবর্তী জায়গায় রাশিয়ার একটি সামরিক গোয়েন্দা বিমানটি ভূপাতিত করেছে তারা। এক মাসের মধ্যে ইউক্রেন এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এমন দাবি জানাল।