‘উষ্ণ অভ্যর্থনা’র জন্য মাখোঁকে ধন্যবাদ দিলেন সৌদি যুবরাজ

সৌদি যুবরাজকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন মাখোঁ
ছবি: রয়টার্স

ফ্রান্সে ‘উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সৌদি যুবরাজ। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে মাখোঁকে ধন্যবাদ জানান তিনি। খবর এএফপির।

ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি সরবরাহ কমে যাওয়ায় অন্য দেশ থেকে জ্বালানির সরবরাহ বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন পশ্চিমা নেতারা। এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার রাতে ফ্রান্সের প্যারিসে দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে বৈঠক করেন সৌদি যুবরাজ।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক বার্তায় সৌদি যুবরাজ বিন সালমান বলেন, ‘আপনাদের বন্ধুত্বপূর্ণ এ দেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে বলতে চাই, এ সফরে আমাকে এবং সফরসঙ্গীদের যে ধরনের উষ্ণ অভ্যর্থনা ও প্রশংসনীয় আতিথেয়তা দেওয়া হয়েছে, তার জন্য আপনার প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।’

আরও পড়ুন

বৃহস্পতিবার রাতের ওই বৈঠক নিয়ে মাখোঁর কার্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশ সৌদি আরব থেকে অতিরিক্ত তেল ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করাকে বৈঠকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোয় এটাই যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রথম সফর। মার্কিন গোয়েন্দারা ২০১৮ সালে তুরস্কের সৌদি দূতাবাসে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার ঘটনায় সৌদি যুবরাজের ইন্ধনকে দায়ী করে থাকেন। তবে চার বছরের মাথায় জ্বালানি–সংকটকে কেন্দ্র করে আবারও সৌদি যুবরাজকে কাছে টানতে দেখা যাচ্ছে তাঁদের।

চলতি মাসের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রিয়াদ সফর করেন। সে সফর নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছিল। সে সময় মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বাইডেনকে ফিস্ট বাম্প (হাত মুষ্টিবদ্ধ রেখে মেলানো) করেছিলেন। এবার মাখোঁর সঙ্গে সৌদি যুবরাজের বৈঠককেও ভালোভাবে নিচ্ছেন না অনেকেই।

বৃহস্পতিবার এলিসি প্রাসাদে সৌদি যুবরাজকে স্বাগত জানানোর সময় তাঁর সঙ্গে করমর্দন করেন মাখোঁ। এ নিয়ে সমালোচনা করে গতকাল বিএফএম টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বামপন্থী জ্যেষ্ঠ এমপি অ্যালেক্সি কোবিয়ে বলেন, ‘তিনি দীর্ঘ সময় ধরে এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে করমর্দন করছিলেন, যাঁর হাত কিনা রক্তে রঞ্জিত।’

তবে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সহযোগীরা এ বৈঠকের পক্ষে কথা বলছেন। নীতিগত বিবেচনাবোধের চেয়ে বাস্তবিক চাহিদাকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রচার করতে চাইছেন তাঁরা। মাখোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং ফ্রান্সের জনসেবাবিষয়ক মন্ত্রী স্তানিসলাস গুয়েরিনি ইউরোপ ওয়ান রেডিওকে বলেন, ‘অনেক সহযোগী ও দেশ আছে, যাদের সবাই ফ্রান্সের মতো একই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী নয়। তবে আমি মনে করি, কথা না বলা, কোনো কিছু করার চেষ্টা না করাটা ভুল।’

গুয়েরিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্টের কাজ হলো ফরাসি জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। সব সময়ের মতো গত রাতেও প্রেসিডেন্ট ফরাসি মূল্যবোধ, ফ্রান্সের মানুষের কণ্ঠস্বর, মানবাধিকারের সুরক্ষার পক্ষে কাজ করেছেন।

এর আগে ২০১৮ সালে সৌদি যুবরাজকে ফ্রান্সে স্বাগত জানিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে তিনি নিজেই সৌদি আরব সফর করেছেন।