হিটলারের জন্মস্থানে হবে মানবাধিকার প্রশিক্ষণকেন্দ্র

১৮৮৯ সালের ২০ এপ্রিল অস্ট্রিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ব্রাউনাউ আম ইন শহরের এই ভবনে জন্ম নিয়েছিলেন অ্যাডলফ হিলটার
রয়টার্স ফাইল ছবি

নাৎসি একনায়ক অ্যাডলফ হিটলার অস্ট্রিয়ার যে বাড়িতে জন্মেছিলেন, সেটিকে পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য মানবাধিকারবিষয়ক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে রূপান্তর করা হবে। সম্প্রতি অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা দিয়েছে।

নব্য নাৎসিদের অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিণত হওয়া বাড়িটি নিয়ে কী করা হবে, তা নিয়ে কয়েক বছর ধরেই নানা বিতর্ক চলছিল।

১৮৮৯ সালের ২০ এপ্রিল অস্ট্রিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ব্রাউনাউ আম ইন শহরের একটি ভবনে জন্ম নেন হিলটার। শহরটির অবস্থান ভিয়েনা থেকে ২৮৪ কিলোমিটার পূর্বে।

১৯৩৯ সালে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করেছিলেন
এএফপি ফাইল ছবি

নথি বলছে, হিটলারের জন্মের আগেই তিনতলা ওই ভবনের মালিকানা গারলিন্দে পোমার নামের এক ব্যক্তির পরিবারের কাছে চলে যায়। পরে হিটলারের বয়স যখন তিন বছর, তখন তাঁর পরিবার সেখান থেকে চলে যায়।

ভবনটি নিয়ে অনেক বিতর্কের পর ২০১৬ সালে অস্ট্রিয়া সরকার বাধ্যতামূলক এক ক্রয়াদেশ জারি করে। এর আওতায় সরকার সেটির মালিকানা নিজের হাতে নেয়। ২০১৯ সালের শেষের দিকে ভবনটিতে পুলিশ স্টেশন স্থাপন করা হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘কট্টরপন্থীদের কাছে ভবনটির পৌরাণিক আবেদন’ নিয়ে উদ্বেগের জেরে আন্তবিভাগীয় বিশেষজ্ঞ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সেটিকে মানবাধিকারবিষয়ক প্রশিক্ষণকেন্দ্র করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

১৯৭২ সাল পর্যন্ত ভবনটিতে পোমার পরিবারের সদস্যরাই থাকতেন। ওই বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভবনটি ভাড়া নেয়। পরে বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করতে (সাবলেট) দেওয়া হয়। তবে ২০১১ সাল থেকে ভবনটি খালি পড়ে ছিল।

আরও পড়ুন

২০২৬ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। তবে রাজনীতিবিদ ও ইতিহাসবিদদের প্রতিবাদের মুখে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। এ অবস্থায় ‘বিশেষ আইনি কর্তৃত্ব’-এর অধীন পোমার পরিবারের কাছ থেকে সরকার মালিকানা নেয়।

ভবনটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র পরিণত করতে নির্মাণকাজ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ১৫ লাখ ডলার। ২০২৫ সালের মধ্য নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, অ্যাডলফ হিটলার ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির নাৎসি বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

১৯৩৯ সালে প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করেছিলেন। ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল বার্লিনে তাঁর আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে সেই মহাযুদ্ধ শেষ হয়েছিল।

আরও পড়ুন

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রায় ছয় কোটি মানুষ প্রাণ হারান। যুদ্ধের সময় হিটলার ও তাঁর সহযোগীরা জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যে বর্বরতা ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিলেন, তা ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস অধ্যায়।

আরও পড়ুন