অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে না

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
ফাইল ছবি

লাখ লাখ গোপন নথি ফাঁস করে সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হচ্ছে না। তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাজ্যের একটি আদালত আজ সোমবার এই রায় দিয়েছেন।

অ্যাসাঞ্জকে দেশে নিয়ে বিচার করতে বেশ তৎপরতা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে ডিস্ট্রিক্ট জজ ভ্যানেসা ব্যারাইটসার বলেন, ‘অ্যাসাঞ্জকে যদি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়, তবে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন। তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিলে তিনি মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

এতে তিনি অত্যাচারিত হবেন।’ এসব কারণ বিবেচনা করে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া, তা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিচারক।

ব্রিটিশ আদালত যখন এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়, তখন অ্যাসাঞ্জ তাঁর কপাল মুছছিলেন। তাঁর বাগদত্তা স্টেলা মরিস কেঁদে ফেলেন।

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের ওল্ড বেইলি কোর্টে অ্যাসাঞ্জের মামলার শুনানি হয়।

এই শুনানি উপলক্ষে আজ সকাল থেকেই অ্যাসাঞ্জের সমর্থকেরা আদালতের বাইরে জড়ো হন। তাঁরা সেখানে স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘অ্যাসাঞ্জের মুক্তি দিন’। যদিও তাঁকে জামিন দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে রাতে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা। এ ছাড়া এই শুনানির আগে জার্মানি ও জাতিসংঘের এক বিশেষ দূত মানবাধিকার ইস্যুকে সামনে এনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। কারণ, অ্যাসাঞ্জের শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা রয়েছে এবং করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিও তুলনামূলক বেশি তাঁর।

প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে অ্যাসাঞ্জের বিচার চলছে। তিনি ও তাঁর আইনজীবীরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন, এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অবশেষে আজ তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে আদালেতের সিদ্ধান্ত এল। যদিও আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল হতে পারে।

ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধের মার্কিন সামরিক নথি প্রকাশ করেন অ্যাসাঞ্জ। ২০১০ সালে এসব নথি প্রকাশের ফলে তাঁর বিরুদ্ধে ১৮টি গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্র। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১৭৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।