দোষী সাব্যস্ত হলে অ্যাসাঞ্জের ১৭৫ বছরের জেল

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
ফাইল ছবি।

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কুখ্যাত কারাগারের অভ্যন্তরেই জীবনের ইতি টানতে হতে পারে। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর এমন পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে বলে গত মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনের একটি আদালতের শুনানিতে উল্লেখ করা হয়। এপির খবরে এ কথা বলা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে নিজের প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে দীর্ঘ আইনি লড়াই চালাচ্ছেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন কারেকশনাল সেন্টারের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক মউরিন বেয়ার্ড বলেন, অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে যে মামলা হয়েছে, তাতে চূড়ান্তভাবে অভিযুক্ত হলে তাঁকে সম্ভবত কলোরাডোর ফ্লোরেন্সের ফেডারেল সুপারম্যাক্স কারাগারে পাঠানো হবে।

অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হলে, জাতীয় নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের ফলে তাঁকে বিশেষ প্রশাসনিক ব্যবস্থার অধীন রাখা হতে পারে। এমন ব্যবস্থা অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়; যেখানে তাঁদের প্রায় সারা দিন কারাপ্রকষ্ঠে অন্য বন্দীদের থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে হয় ও বাইরের বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ হয় খুব কমই।

৪৯ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির ১৭টি অভিযোগ ও এক দশক আগে কম্পিউটারের অপব্যবহার করে উইকিলিকসের মাধ্যমে অসংখ্য গোপন মার্কিন সামরিক নথি ফাঁস করার আরেকটি অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কৌঁসুলিরা। এসব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর সর্বোচ্চ ১৭৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

তবে অ্যাসাঞ্জের আইনজীবীরা বলছেন, গোপন নথি ফাঁস করে অ্যাসাঞ্জ ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অপরাধের তথ্য প্রকাশ করলেও ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্টের অধীন তাঁর সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তাঁরা আরও বলেন, তিনি আত্মহত্যার প্রবণতাসহ বিভিন্ন ধরনের মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কারাগারে প্রতিকূল পরিবেশে থাকলে এই অসুস্থতা আরও বাড়তে পারে।

বেয়ার্ড বলেন, ‘ফেডারেল কারাগারে আমার তিন দশকের কাজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, দীর্ঘদিন ধরে নিঃসঙ্গ জীবন কাটালে একজন বন্দীর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’ তিনি বলেন, আর অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হলে, জাতীয় নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের ফলে তাঁকে বিশেষ প্রশাসনিক ব্যবস্থার অধীন রাখা হতে পারে। এমন ব্যবস্থা অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়; যেখানে তাঁদের প্রায় সারা দিন কারাপ্রকষ্ঠে অন্য বন্দীদের থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে হয় ও বাইরের বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ হয় খুব কমই।

মোস্তফা কামাল মোস্তফা ওরফে আবু হামজা নামে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির কারাজীবনের উদাহরণ টেনে বেয়ার্ড আরও বলেন, অ্যাসাঞ্জকে এ রকম কারাগারে পাঠানো হলে সেখানেই তাঁর জীবনের ইতি ঘটার সম্ভবনা আছে।

প্রসঙ্গত, অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিলম্বিত হয়েছে। তবে এ সপ্তাহে শেষ হতে পারে শুনানি।