মণিপুরে জঙ্গি হামলায় আধা সামরিক বাহিনীর ২ সদস্য নিহত, আহত ২

ভারতের মণিপুরে সড়কে পাহারায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাফাইল ছবি: এএনআই

ভারতে দ্বিতীয় দফার ভোট শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মণিপুর রাজ্যের বিষ্ণুপুর জেলায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। জঙ্গি হামলায় গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সিআরপিএফের আরও দুই সদস্য আহত হয়েছেন।

রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষ্ণুপুর জেলার ময়রাং থানা এলাকায় নারানসিনায় ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের শিবির লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়। গতকাল শুক্রবার মণিপুরে দ্বিতীয় দফায় একটি আসনে ভোট হয়েছে।

রাজ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, জঙ্গিরা শিবির লক্ষ্য করে পাহাড়ের ওপর থেকে নির্বিচার গুলি চালায়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয়ে প্রায় আড়াইটা পর্যন্ত চলে। জঙ্গিরাও বোমাও নিক্ষেপ করেছিল। এর মধ্যে একটি সিআরপিএফের ১২৮ ব্যাটালিয়নের ফাঁড়িতে এসে পড়ে। সেটি বিস্ফোরিত হলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন

জঙ্গি হামলায় নিহত সিআরপিএফের সদস্যরা হলেন সাব–ইন্সপেক্টর (এসআই) এন সরকার এবং হেড কনস্টেবল অরূপ সাইনি। আইআরবিএন ক্যাম্পের নিরাপত্তার স্বার্থে সিআরপিএফ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছিল। ভারতের এই শক্তিশালী আধা সামরিক বাহিনী দেশের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সিআরপিএফ উত্তর ভারতের কাশ্মীর এবং মধ্য ভারতের আংশিকভাবে মাওবাদী–অধ্যুষিত বস্তার অঞ্চলে সামনে থেকে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেয়। অনেক ক্ষেত্রে জঙ্গি ও বিদ্রোহীদের হামলায় বা তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে এই বাহিনীর সদস্যরা নিহত হন। জঙ্গি এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে সিআরপিএফের উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে।

আরও পড়ুন

গতকাল শুক্রবার গভীর রাতের ঘটনায় আহত সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ইন্সপেক্টর যাদব দাস ও কনস্টেবল আফতাব হুসেন। বোমার টুকরা তাঁদের গায়ে আঘাত হেনেছে।
মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, ওই হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চলছে।

গত বছরের মে মাস থেকে মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই ও উপজাতি কুকিদের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষ চলছে। এই সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কমপক্ষে ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

২০২৩ সালে যে লড়াই শুরু হয়েছিল মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে, বর্তমানে সেই লড়াই প্রধানত আধা সামরিক বাহিনী, সেনাবাহিনী ও কুকিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও নিয়মিত সংঘাত হচ্ছে, লাগাতার মৃত্যু হচ্ছে দুপক্ষেই।

আরও পড়ুন