প্রার্থীতালিকায় নেই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার

ত্রিপুরার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার
ফাইল ছবি

ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেছে বামফ্রন্ট। এই তালিকায় রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের নাম নেই। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া– মার্কসবাদীর (সিপিআই–এম) নেতা।

গতকাল বুধবার রাতে প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেছে বামফ্রন্ট। এবারের নির্বাচনে মানিক সরকারের পাশাপাশি রাজ্যের একাধিক সাবেক মন্ত্রীকে প্রার্থী করা হয়নি। এর মধ্যে বাদল চৌধুরী, তপন চক্রবর্তী, শাহিদ চৌধুরী, ভানুলাল সাহার মতো সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রীরাও রয়েছেন।

ত্রিপুরায় টানা প্রায় দুই দশক ক্ষমতায় ছিলেন মানিক সরকার। কিছুদিন আগে তিনি বলেছিলেন, এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না তিনি। এর বদলে তিনি দলের হয়ে কাজ করতে চান। মানিক সরকারের আসনে এবার সিপিআই–এম প্রার্থী করেছে নতুন মুখ কৌশিক চন্দকে।

ত্রিপুরার বিধানসভায় আসন সংখ্যা ৬০। এর মধ্যে বামফ্রন্ট ৪৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলটি জোটসঙ্গী কংগ্রেসের জন্য ১৪টি আসন ছেড়ে দিয়েছে। ৪৬টি আসনের মধ্যে সিপিআই–এম একাই লড়বে ৪৩টি আসনে। এর মধ্যে ২৪টি আসনে দলটি তরুণদের প্রার্থী করেছে। আর তিনটি আসন সিপিআই–এম ছেড়েছে বামফ্রন্টের অন্যান্য শরিক কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (সিপিআই), রেভল্যুশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টি (আরএসপি) এবং ফরওয়ার্ড ব্লককে।

আরও পড়ুন

তবে সিপিআই–এমের একতরফা প্রার্থী ঘোষণা কংগ্রেসকে অসন্তুষ্ট করেছে। এবারের নির্বাচনে বামফ্রন্ট কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ত্রিপুরায় লড়ছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, তাদের পক্ষে এই আসন সমঝোতা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে কংগ্রেস বামফ্রন্টের চেয়ে ভালো করেছিল।

যদিও ২০১৮ সালে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জয় পায় ৩৬টি আসনে। অন্যদিকে বামফ্রন্ট পায় ১৬টি আসন। কংগ্রেস কোনো আসনেই জয় পায়নি। অর্থাৎ, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ভালো ফল করলেও, ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে ভালো ফল করেছিল বামফ্রন্ট।

কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি বীরজিৎ সিংহ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দিল্লিতে সিপিআই–এমের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা এখনো শেষ হয়নি। ওই আলোচনায় বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

আরও পড়ুন

এদিকে এককভাবে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করে সিপিআই–এম ঠিক কাজ করেছে কি না, তা নিয়ে দলের ভেতরেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, আসন বণ্টন নিয়ে উপজাতি দল টিপ্রা মথার সঙ্গেও কথাবার্তা চলছিল কংগ্রেস-বাম জোটের। টিপ্রা মথার প্রধান প্রদ্যুৎ দেববর্মন ত্রিপুরার রাজনীতিতে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে উঠে এসেছেন। তিনি জানান, এবারের নির্বাচনে টিপ্রা মথার এককভাবে প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও গত সপ্তাহে প্রদ্যুৎ দেববর্মন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠক নিয়ে বিজেপির মুখপাত্র ও প্রদ্যুৎ দেববর্মন কেউই মুখ খোলেননি।

উল্লেখ্য, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গণনা হবে আগামী ২ মার্চ।

আরও পড়ুন