ভারতে ৫ বছরে ৩ হাজার সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা
ভারতে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় তিন হাজার সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার ভারতের সংসদে এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। এর মধ্যে ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি—৮৫৭টি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে এ তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রী। বিভিন্ন তথ্যের সংকলন করলে দেখা যাবে, ২০১৪ সালের পর থেকে ভারতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রমন্ত্রী রাই বলেন, ২০২১ সালে ৩৭৮টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর আগের তিন বছর অর্থাৎ ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ৭২৩, ৫১২ ও ৪৩৮টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ভারতে ঘটেছে। মামলা নথিভুক্তকরণের রেকর্ডের ভিত্তিতে এই তথ্য পাওয়া গেছে। গত মার্চ মাসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে রাই জানিয়েছিলেন, ২০১৬ সালে ৮৬৯টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল।
অতীতে ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে ৪১ শতাংশ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে ভারতে।
সম্প্রতি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের তরফে তাদের একটি জাতীয় স্তরের সংগঠন জানিয়েছে, ২০২২ সালে তাদের ওপর হামলার ৫১১টি ঘটনা ঘটেছে, যা ভারতে একটি সর্বকালের রেকর্ড।
ভারতের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রোধ করতে কেন্দ্র সরকার কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে—এই প্রশ্নের উত্তরে নিত্যানন্দ রাই বলেন, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে একটি নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল, সাম্প্রদায়িক হিংসা বা উত্তেজনা ছড়াতে পারে—এমন খবরের ওপর নজর রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে হবে। উত্তেজক গুজব ও সংবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মারফত ছড়ানো হচ্ছে কি না, সেদিকেও নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে রাই জানান।
তবে সরকারেরই সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, সেই নির্দেশে বিশেষ কাজ হয়নি। শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে সরকারের দেওয়া এই তথ্য নিয়ে সংসদে আলোচনা ও বিতর্কের সম্ভাবনা রয়েছে।