চিতা নিয়ে বিজেপি–কংগ্রেস রাজনৈতিক বিতর্ক চলছেই

নামিবিয়া থেকে ভারতে আসা চিতা
ছবি: এএনআই

ভারতে চিতার প্রত্যাবর্তন ঘিরে বিজেপি-কংগ্রেসের চাপান-উতোর ও রাজনীতি অব্যাহত। দেশে চিতা আনার উদ্যোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস তাঁকে ‘জন্মগত মিথ্যাবাদী’ বলেছিল গত রোববার। এর এক দিন পর গতকাল সোমবার কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে জানিয়ে দিলেন, মোদি দেশকে কোন আটটি ‘চিতা’ উপহার দিলেন তাদের নাম।

মল্লিকার্জুন খাড়গে গতকাল টুইট করে বলেন, ‘মোদি সরকার যে আট চিতা আমদানি করেছে, সেগুলোর নাম বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, দারিদ্র্য, ক্ষুধা, সাম্প্রদায়িকতা, ঘৃণা, হিংসা ও দমন। আর এই চিতাদের উনি ভারতের মানুষদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছেন।’

পৌনে এক শ বছর ধরে চিতাশূন্য ভারতে চিতার প্রত্যাবর্তন ঘিরে এমন রাজনৈতিক রেষারেষি হয়তো ঘটত না, যদি না প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে বিতর্ক সৃষ্টি করতেন। গত শনিবার নিজের ৭২তম জন্মদিনে মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় অভয়ারণ্যে আফ্রিকান চিতা ছাড়ার আগে এক ভাষণে মোদি বলেন, ৭০ বছর ধরে কোনো সরকার ভারতে চিতা ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগই নেয়নি। ‘প্রজেক্ট চিতা’ তাঁর সরকারই সফল করেছে।

মোদির এই দাবির বিরোধিতা করে কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ গত শনিবার বলেন, চিতা প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল মনমোহন সিং সরকার ২০০৮-০৯ সালে। প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি নিজে বন ও পরিবেশমন্ত্রী হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের দরুন সেই উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়। ২০২০ সালে সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহৃত হয়।

আরও পড়ুন

শনিবার জয়রাম রমেশ তাঁর দাবির সমর্থনে কিছু তথ্য দাখিল করেছিলেন। সেগুলোর অন্যতম ছিল দক্ষিণ আফ্রিকায় চিতার সঙ্গে নিজের ছবিও। সেই টুইটে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘প্যাথলজিক্যাল লায়ার’ বলেছিলেন। রোববার তিনি আরও তথ্য, সংশ্লিষ্ট সরকারি চিঠি দাখিল করে প্রধানমন্ত্রীকে ‘জন্মগত মিথ্যাবাদী’ বলে অভিহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদিকে তিনি ‘মিথ্যার জগদ্‌গুরু’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘নিজেকে তিনি আরও নিচে নামালেন। চিতা আনার প্রচেষ্টা কবে থেকে শুরু হয়েছিল, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি।’

চিতা আনার বিষয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীই প্রথম সমালোচনার সুর বেঁধে দিয়েছিলেন। তিনি জানতে চেয়েছিলেন, ‘৮টি চিতা তো এল, কিন্তু ৮ বছরে ১৬ কোটি চাকরি কেন এল না? কর্মহীন বেকার যুবকদের এটাই জিজ্ঞাসা।’ সেই সুরে বিহারের কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমার বলেন, ‘ওরা বলেছিল কালোটাকা ফেরত আনবে। অথচ আনল চিতা। এটাই মুশকিল। আমাদের দরকার রেশন, সরকার দেবে ভাষণ। চাই চাকরি, সরকার দেবে চমক।’

আরও পড়ুন