ইন্ডিগোর ফ্লাইট বিপর্যয়ে কয়েক দিন ধরে ভারতের উড়োজাহাজ পরিবহন পরিষেবায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। দেশজুড়ে বিভিন্ন বিমানবন্দরে ইন্ডিগোর একের পর এক ফ্লাইট বিলম্ব অথবা বাতিল হয়েছে। এতে হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। যদিও পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
এর মধ্যে গত ৫ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতের একটি বিমানবন্দরের ভেতরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ইন্ডিগোর ‘হেল্প ডেস্কের’ সামনে শতাধিক মানুষ ভিড় করেছেন। তাঁরা ‘হেল্প ডেস্কে’ থাকা ইন্ডিগোর কর্মীদের নানা প্রশ্ন করছেন।
এরই মধ্যে এক ব্যক্তিকে মরিয়া হয়ে মেয়ের জন্য একটি স্যানিটারি প্যাড চাইতে দেখা যাচ্ছে। ওই ব্যক্তির শরীরী ভাষা বলে দিচ্ছে, তিনি চরম হতাশা থেকে বিপর্যস্ত ও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন।
ইন্ডিগো ভারতের সবচেয়ে বড় উড়োজাহাজ সংস্থা। দেশে-বিদেশে দিনে তাদের ২ হাজার ৩০০টির মতো ফ্লাইট চলাচল করে।
নিউজ১৮–এর বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বলেছে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দিল্লি বিমানবন্দরের।
ভিডিওতে বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের ফ্লাইট–সংক্রান্ত তথ্যের অভাব ও বিমানবন্দরে জরুরি পণ্যসামগ্রী না পাওয়ার কারণে হতাশা থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে।
ভারতের উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা-ডিজিসি সম্প্রতি ফ্লাইট চলাচলে কিছু নতুন নিয়ম জারি করেছে। নতুন নিয়মে বিশেষ করে পাইলট ও কেবিন ক্রুদের ছুটি দেওয়ার বিষয়ে কিছু বাধ্যবাধকতা জারি করা হয়েছে।
পাইলট ও কেবিন ক্রুরা যেন পর্যাপ্ত বিশ্রাম পান, ক্লান্তি ও অবসাদে না ভোগেন এবং দুর্ঘটনার সম্ভাবনা যাতে কমে যায়, সে কারণে ওইসব নিয়ম জারি করা হয়েছে।
কিন্তু নভেম্বরে বাধ্যতামূলকভাবে এই বিধি চালু করতেই ভারতের উড়োজাহাজ চলাচল ব্যবস্থা ধসে পড়ে। বিশেষ করে দিল্লি, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদসহ ভারতের বড় বড় বিমানবন্দরে ইন্ডিগোর ফ্লাইট চলাচলে বিপর্যয় নেমে আসে।
হাজার হাজার মানুষ বিমানবন্দরগুলোতে আটকা পড়েন। বিমানবন্দরে খাবার, পানি ও প্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দেয়।
৫ ডিসেম্বর দিল্লি বিমানবন্দরে ধারণ করা ভিডিওতে ওই ব্যক্তিকে ইন্ডিগোর হেল্প ডেস্কে বসে থাকা এক নারীকে উদ্দেশ করে বলতে শোনা যায়, ‘বোন, আমার মেয়ের জন্য একটি (স্যানিটারি) প্যাড চাই...আমাকে একটি প্যাড দিন।’
দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ওই ব্যক্তিকে সে সময় জোরে জোরে ডেস্কে চাপড় দিতে দেখা যায়।
মেয়ের জন্য বাবার এই হাহাকারের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে এক্স ও ইনস্টাগ্রামে।
ভিনা জেইন নামে একটি ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি ৫ লাখ ৬১ হাজার মানুষ দেখেছেন (এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত)।