জলপাইগুড়িতে বিজেপির সংসদ সদস্য ও বিধায়ককে মারধরের ঘটনায় মোদি–মমতার ‘বাগ্‌যুদ্ধ’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ফাইল ছবি: এএনআই

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বন্যাকবলিত জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় গত সোমবার ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়েছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সংসদ সদস্য খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। এ সময় তাঁরা মারধরের শিকার হন।

বিজেপির অভিযোগ, রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–কর্মীরা সংসদ সদস্য ও বিধায়ককে মারধর করেছেন। খগেন মুর্মু মাথায় আঘাত পেয়েছেন। এ ঘটনায় বিজেপির শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে রাজ্য নেতারাও প্রতিবাদে সরব হন। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় রাজপথে নেমে প্রতিবাদ করেন বিজেপির নেতা–কর্মীরা।

বিজেপির সংসদ সদস্য ও বিধায়কের ওপর আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটার কড়া জবাব দেন।

সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় লেখা এক পোস্টে বলেন, ‘যেভাবে আমাদের দলের সহকর্মীরা—যাঁদের মধ্যে একজন বর্তমান সংসদ সদস্য ও একজন বিধায়ক রয়েছেন; পশ্চিমবঙ্গে বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবা করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন, এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’

মোদি আরও বলেন, ‘এ ঘটনা তৃণমূল কংগ্রেসের অসংবেদনশীলতা ও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার করুণ রূপের স্পষ্ট প্রতিফলন।’

ওই পোস্টে প্রধানমন্ত্রী মোদি এ ঘটনায় সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নিশানা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার একান্ত কামনা, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেস এ কঠিন পরিস্থিতিতে হিংসায় লিপ্ত না হয়ে মানুষের সহায়তায় আরও মনোযোগ দেবে।’ সেই সঙ্গে তিনি বিজেপির নেতা–কর্মীদের জনগণের পাশে থেকে উদ্ধারকাজে সহায়তার আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া নরেন্দ্র মোদির এমন পোস্টের সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর অভিযোগ, উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও রাজনীতি করতে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী।

এক পোস্টে মমতা লেখেন, ‘এটি দুর্ভাগ্যজনক ও গভীরভাবে উদ্বেগের যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী যথাযথ তদন্তের অপেক্ষা না করেই একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের রাজনীতিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশেষ করে যখন উত্তরবঙ্গের মানুষ ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস পরবর্তী পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করছেন।’

ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান চলাকালে বিজেপির নেতারা স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনকে কিছু না জানিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীসহ বিশাল কনভয় নিয়ে দুর্যোগকবলিত এলাকায় গেছেন বলেও অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর।

আরও পড়ুন

মমতা পোস্টে আরও লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কোনো ধরনের যাচাই, প্রমাণ, আইনি তদন্ত বা প্রশাসনিক প্রতিবেদন ছাড়াই তৃণমূল কংগ্রেস ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সরাসরি দোষারোপ করেছেন। এটি শুধু নিম্নমানের রাজনীতির উদাহরণ নয়, এটি প্রধানমন্ত্রী যে সাংবিধানিক নীতি বজায় রাখার শপথ নিয়েছেন, তার লঙ্ঘন। গণতন্ত্রে আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হয়। কেবল আইনি প্রক্রিয়াই দোষী চিহ্নিত করতে পারে। কোনো রাজনৈতিক টুইট নয়।’

সোমবার বেলা একটার দিকে মারধরের ঘটনাটি ঘটলেও গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ধরা পড়েননি। 

আরও পড়ুন