গ্রেপ্তারের পর এবার বিট্টু বজরঙ্গিকে ছেড়ে গেল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ

বিট্টু বজরঙ্গী: তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের নুহ জেলায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিট্টু বজরঙ্গিকে অস্বীকার করল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)। সামাজিক মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তারা জানিয়েছে, স্বঘোষিত গোরক্ষক বিট্টু বজরঙ্গির সঙ্গে ভিএইচপির শাখা সংগঠন বজরঙ্গ দলের কোনো সংশ্রব নেই। কোনোকালে ছিলও না।

শুধু এই অস্বীকৃতিই নয়। ভিএইচপি জানিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও বার্তা মারফত বিট্টু যা প্রচার করেছেন, তার সঙ্গে সংগঠন সহমত নয়। ভিডিওতে তিনি যা বলেছেন তা অনুচিত।

গত ৩১ জুলাই হরিয়ানার মুসলমান–অধ্যুষিত নুহ জেলায় হিন্দুদের এক ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছিল। তাতে মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়। সংঘর্ষের রেশ ছড়িয়ে পড়েছিল রাজ্যের অন্যত্রও।

আরও পড়ুন

অভিযোগ রয়েছে, নিজেদের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরঙ্গ দলের সদস্য বলে দাবিদার বিট্টু বজরঙ্গি ও মনু মানেসর নামের দুই ব্যক্তি ওই শোভাযাত্রা শুরুর আগে থেকে সামাজিক মাধ্যমে নানা ধরনের বিবৃতি দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিলেন। দুই সম্প্রদায়ের সংঘর্ষের কারণও তা।

সেই ঘটনার পর দুই সপ্তাহ পার হলেও ভিএইচপি কিন্তু নীরব ছিল। হরিয়ানা পুলিশ গত মঙ্গলবার বিট্টু বজরঙ্গিকে গ্রেপ্তার করার পর দিন ভিএইচপি তাঁকে অস্বীকার করার কথা জানায়। এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, ভিএইচপি চায় না, উত্তেজনা সৃষ্টি ও সশস্ত্র সংঘর্ষের কোনো দায় তাদের ঘাড়ে পড়ুক।

বজরঙ্গ দলের নাম করে বিট্টু ও মনু অনেক দিন ধরেই হরিয়ানায় সক্রিয়। মনু মানেসরের বিরুদ্ধে রাজস্থানের দুই মুসলমান যুবককে গোহত্যার অভিযোগে পুড়িয়ে মারার অভিযোগও রয়েছে। রাজস্থান পুলিশ তাঁকে খুঁজছে। বিট্টুর মতো মনু মানেসরও নিজেকে বজরঙ্গ দলের সঙ্গে যুক্ত দাবি করেন। তবে ভিএইচপি তাঁকে অস্বীকার করে এখনো কোনো বিবৃতি দেয়নি।

আরও পড়ুন

নুহ সংঘর্ষের পর হরিয়ানার বিভিন্ন জেলায় মুসলমানদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বর্জনের ডাক দেওয়া হয়। কৃষক সমাজ তার বিরোধিতা করে। নুহ, গুরুগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় মুসলমানদের ব্যবসা ও কাজকারবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বন্ধ দোকান নতুন করে খুলতে শুরু করেছে। কিছু কিছু ঘরছাড়া মানুষ ফিরে আসছেন বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।

২৮ আগস্ট নুহ জেলায় আবারও হিন্দু ধর্মীয় শোভাযাত্রা বের করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত শোভাযাত্রার অনুমতি দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে রাজ্য পুলিশ এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে যে সমাবেশে যাঁরা ওই ঘোষণা করেছিলেন, তাঁদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশ ঘৃণা ভাষণের অভিযোগে মামলা করেছে।