প্রোজ্জ্বলকে তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে নির্দেশ

ভারতের লোকসভার সদস্য প্রোজ্জ্বল রেভান্না। তাঁর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছেছবি: এএনআই

ভারতে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠা ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার নাতি ও জনতা দলের (জেডিএস) সংসদ সদস্য প্রোজ্জ্বল রেভান্নাকে বিশেষ তদন্তকারী দলের (এসআইটি) সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে এসআইটির কাছে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন কর্ণাটক রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জে পরামেশ্বরা। তিনি বলেন, তাঁকে দ্রুত তদন্ত দলের সামনে হাজির হতে হবে। নইলে প্রোজ্জল গ্রেপ্তার হবেন।

এসআইটির কাছে সাত দিনের সময় চেয়ে করা প্রোজ্জ্বলের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ৩৩ বছর বয়সী প্রোজ্জ্বলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রায় তিন হাজার নারীকে যৌন নির্যাতন করেছেন। নির্যাতনের ভিডিও তৈরি করে সেই নারীদের তিনি ব্ল্যাকমেল করতেন।

নির্বাচনের সময় সেসব নির্যাতনের ভিডিও গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এর পরেই কংগ্রেসশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া গত শনিবার এই বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেন। যৌন নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রোজ্জ্বল দেশ ত্যাগ করেন। শোনা যাচ্ছে, তিনি জার্মানিতে চলে গেছেন। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সুযোগ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।

এর আগে প্রোজ্জ্বলের আইনজীবী বলেন, এই মামলার অনেক দিক আছে। সবকিছু খতিয়ে দেখতে সাত দিন সময় প্রয়োজন। এ ছাড়া যেসব ভিডিও সামনে এসেছে, তা বিকৃত করা হয়েছে।

এর আগে জেডিএসের সংসদ সদস্য প্রোজ্জ্বল দাবি করেন, তিনি বেঙ্গালুরুতে নেই। তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে সিআইডির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। শিগগিরই সত্য সামনে আসবে।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে প্রোজ্জ্বলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে। রাজ্যে বিজেপির জোটসঙ্গী জেডিএসের বিরুদ্ধে ব্যাপক আক্রমণ শুরু করেছে কংগ্রেস। দলটির নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে বলেছেন, আগে তিনি (মোদি) প্রোজ্জ্বলকে জার্মানি থেকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন। শাস্তি দিন। তারপর মা-বোনদের মঙ্গলসূত্র কেড়ে নেওয়া নিয়ে কংগ্রেসকে গালমন্দ করুন।

আজ বৃহস্পতিবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এ নিয়ে বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করে বলেন, জেডিএসের সঙ্গে জোট করে প্রধানমন্ত্রী গণধর্ষকের পক্ষে ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মঙ্গলবার রেভান্নার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিন্দা করে বলেন, এ বিষয়ে নিজের দলের রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন করা উচিত প্রিয়াঙ্কার। প্রিয়াঙ্কা পাল্টা অভিযোগ তোলেন, ইচ্ছা করলেই দেশ থেকে পালানোর আগে রেভান্নাকে আটকাতে পারত বিজেপি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ তা করেননি।

চাপের মুখে অবশ্য রেভান্নাকে বরখাস্ত করেছে জেডিএস নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন