পি কে হালদারকে আজ আবার আদালতে তুলছে ইডি

প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারফাইল ছবি

প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) আজ মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে তুলবে দেশটির তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গত শনিবার থেকে তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার পরে মামলার কী অগ্রগতি হয়েছে, সে সম্পর্কে জানানোর পাশাপাশি আরও বেশিদিন পি কে হালদারকে তাদের হেফাজতে রাখার আবেদন করবে ইডি।

ধারণা করা হচ্ছে, তদন্তে অগ্রগতির ব্যাপারে আদালতকে একটা মোটামুটি ধারণাও দিতে পারে ইডি।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

তিন দিন ধরে পি কে হালদার ও তাঁর পাঁচ সহযোগী, যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের দফায় দফায় জেরা করেছে ইডি। পি কে হালদারের আরও সম্পত্তির বিষয়ে তারা নির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে; যদিও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানায়নি ইডি।

আরও পড়ুন

অসংখ্য জমি ও বাড়ির পাশাপাশি মাছের যে ঘেরগুলো হালদার ও তাঁর সহযোগীরা দীর্ঘ মেয়াদে লিজ নিয়েছিলেন, সেগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখন এটা মোটামুটিভাবে পরিষ্কার, তদন্ত কিছুটা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে জমিজমা সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি করে পি কে হালদারকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

এর আগে গত শনিবার বাংলাদেশের আর্থিক খাতে আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) ও তাঁর পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে ইডি। শনিবার সংস্থাটি এই ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে নিতে পশ্চিমবঙ্গের একটি আদালতে আবেদন করে। আবেদনের পর তাদের তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পি কে হালদারের প্রাসাদোপম বাড়িসহ অনেক সম্পদের সন্ধান পায় ইডি। সংস্থাটি পি কে হালদার ও তাঁর সহযোগীদের সম্পদের সন্ধানে অন্তত ১০টি স্থানে অভিযান চালায়। প্রধানত আর্থিক কেলেঙ্কারি, বেআইনিভাবে ভারতে অর্থ পাঠানো, বিদেশে অর্থ পাচার এবং আইনবহির্ভূত সম্পত্তির বিষয়ে তদন্ত করছে ইডি। অবশ্য এ পর্যন্ত কতগুলো বাড়ি, জমি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হদিস পাওয়া গেছে, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য এখনো জানা যায়নি।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পি কে হালদার বাংলাদেশে আর্থিক খাতের শীর্ষ দখলদার ও খেলাপিদের একজন। ২০১৯ সালে তিনি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে যান, পরে কানাডায় পাড়ি জমান।

ভারতের বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ ও বসবাস, বেনামে সম্পত্তি কেনা এবং আইনবহির্ভূতভাবে অর্থ বাংলাদেশ থেকে ভারতে আনা—এসব অভিযোগে পি কে হালদার ও তাঁর পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে ইডি। এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ২০০২ সালের মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট বা অর্থ পাচার আইনের ওপরে। তবে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে পি কে হালদারের ব্যবসা দেখাশোনা করা তাঁর ভাই প্রাণেশ কুমার হালদার আছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ইডি বলছে, পি কে হালদার নিজেকে শিবশংকর হালদার পরিচয় দিয়ে ভারতের একাধিক সরকারি পরিচয়পত্র, যেমন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রেশন কার্ড, ভোটার পরিচয়পত্র, আয়কর দপ্তরের পরিচয়পত্র পিএএন বা প্যান, নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র, আধার কার্ড ইত্যাদি জোগাড় করেছিলেন। পি কে হালদারের সহযোগীরাও একই কাজ করেছেন বলে জানিয়েছে ইডি।