ব্যায়াম প্রশিক্ষকই কি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী?

ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির সভাপতি বিপ্লব দেব।
ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির সভাপতি বিপ্লব দেব।
>

• বিপ্লব দেব ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির দায়িত্ব পান ২০১৬ সালে ৭ জানুয়ারি 
• বিপ্লব দেব আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন 
• ৪৯ বছর বয়সী বিপ্লব ১৫ বছর দিল্লিতে ছিলেন 
• ত্রিপুরার বনমালিপুর আসন থেকে লড়েছেন বিপ্লব

উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরায় গেরুয়া-ঝড়ে উড়ে গেল বাম দুর্গ। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি।

২৫ বছরের বাম শাসনের অবসান। আঞ্চলিক দল আইপিএফটির সঙ্গে জোট বেঁধে টানা ২৫ বছরের বাম শাসনকে কার্যত উড়িয়ে দিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। ৫৯টি কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি জোট ৪৩টি আসনে জয়ী। কংগ্রেস এ রাজ্য কোনো আসন পায়নি। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সিপিএম ১৬টি আসনে জয় ধরে রেখেছে। বলা যায়, পুরো রাজ্যে গেরুয়া-ঝড়ে কার্যত উড়ে গেল লাল দুর্গ। ত্রিপুরায় ঐতিহাসিক এ ফলাফল শেষে এখন আলোচনার বিষয় কে হতে যাচ্ছেন রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, একজন ব্যায়াম প্রশিক্ষকই হতে যাচ্ছেন এ রাজ্যর মুখ্যমন্ত্রী। তবে বিজেপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখন নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি।

ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির সভাপতি বিপ্লব দেব। তিনি কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা দলটির সবচেয়ে কম বয়সী রাজ্য সভাপতি। ত্রিপুরা বিজেপির দায়িত্ব পান ২০১৬ সালে ৭ জানুয়ারি। এই যুবক নেতা মাত্র দুই বছরের মাথায় ২৫ বছরের বাম শাসনের পতন ঘটিয়ে লাল থেকে গেরুয়া রঙে রাঙিয়ে দিলেন ত্রিপুরাকে। অন্য অনেকের নাম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আলোচনা থাকলেও অন্য অনেকের চেয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন বিপ্লব দেব। তাঁর হাতেই ত্রিপুরার ভার সঁপে দেওয়া হতে পারে। বিপ্লব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হতে প্রস্তুত আছি। তবে দলের সিদ্ধান্তই শেষ কথা।’

দুই বছরের ক্যারিশমা
বিপ্লব দেব ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির দায়িত্ব পান ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি। এই যুবক নেতা মাত্র দুই বছরের মাথায় ২৫ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটালেন। ত্রিপুরা বিজেপির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়ার পরই ক্যারিশমা দেখালেন বিপ্লব। অমিত শাহ-মোদির জুটির আস্থা ছিল বিপ্লবের ওপর। সেই আস্থার প্রতিদান দিলেন তিনি।

আস্থার প্রতিদান
বিপ্লব আরএসএসে থাকায় কখনো অন্য কোনো দলের প্রতি আকৃষ্ট হননি। সেটা মাথায় রেখেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিপ্লবের ওপর আস্থা রাখেন। সেই আস্থার প্রতিদানে দলকে রাজ্যের ক্ষমতায় আনার পেছনে কাজ করেছেন তিনি। এর আগে বিপ্লব দিল্লি ও মধ্যপ্রদেশের বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন।

নতুন পদ পেয়ে রাজ্য জয়
বিপ্লবের আগে ত্রিপুরায় দলের নেতৃত্বে ছিলেন সুধীন্দ্র দাশগুপ্ত। অনেক বছর বিজেপির রাজ্য সভাপতি ছিলেন তিনি। তবে বিপ্লবের সভাপতি হওয়ার পর বিজেপির বিজয়ের দিকে গেরুয়া দৌড় শুরু হয়। এবারের ভোটে ত্রিপুরার বনমালিপুর আসন থেকে লড়েছেন বিপ্লব। এ আসনটি ছিল কংগ্রেসের।

ব্যায়াম প্রশিক্ষক
ত্রিপুরার ভূমিপুত্র বিপ্লব দেব অনেক দিন ধরে আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত। ত্রিপুরার গোমতী জেলায় উদয়পুরে জন্ম। ৪৯ বছর বয়সী দুই সন্তানের জনক বিপ্লব প্রায় ১৫ বছর দিল্লিতে কাটিয়েছেন। সেখানে একটি ব্যায়ামাগারের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন।

বিপ্লবের স্ত্রী নীতি দেব পাঞ্জাবের মেয়ে। দিল্লিতে দুজনের বিয়ে। বিপ্লব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় বিপ্লবকে নির্বাচনে সাহায্য করেছি। ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ায় ত্রিপুরায় আসতে পারিনি। তবে দল জেতায় এবার পাকাপাকি ত্রিপুরায় এসে থাকতে চান বলে জানিয়েছেন নীতি।

নরেন্দ্র মোদি বনাম মানিক সরকারের লড়াইয়ে জিতল নরেন্দ্র মোদির বিজেপিই। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার কোনোরকমে নিজের আসনটি বজায় রাখতে পারলেও তাঁর মন্ত্রিসভার বেশির ভাগ সদস্যই পরাস্ত হয়েছেন। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।