মধ্যরাতে বিজেপি নেতার সঙ্গে শিবসেনার বিদ্রোহী শিন্ডের বৈঠক
শিবসেনার বিদ্রোহী নেতা একনাথ শিন্ডে গতকাল শনিবার মধ্যরাতে বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডনবিশের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। খবর এনডিটিভির।
গুজরাটের বড়োদরায় ফডনবিশের সঙ্গে শিন্ডের এ বৈঠক হয়। বৈঠকে মহারাষ্ট্রে সম্ভাব্য সরকার গঠন নিয়ে তাঁরা আলোচনা করেন বলে সূত্র জানায়।
বিজেপির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও গতকাল রাতে বড়োদরায় ছিলেন। এ বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
সূত্র জানায়, শিন্ডে গত রাতে আসামের গুয়াহাটি থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে গুজরাটের বড়োদরায় যান।
ফডনবিশের সঙ্গে বৈঠক শেষ শিন্ডে আবার বিজেপিশাসিত আসামের গুয়াহাটি শহরে ফিরে যান।
মহারাষ্ট্রে বিজেপির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফডনবিশ। তিনি শিবসেনাপ্রধান উদ্ধব ঠাকরের আগে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। উদ্ধব ঠাকরে ২০১৯ সালে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হন।
আসামের গুয়াহাটি শহরের একটি পাঁচতারকা হোটেলে অবস্থান করছেন প্রায় ৪০ জন বিদ্রোহী বিধায়ক। তাঁরা মহারাষ্ট্রের পূর্ত ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী শিন্ডের অনুগামী।
শিন্ডেসহ ১৬ জন বিদ্রোহী বিধায়ককে গতকাল ‘শোকজ’ নোটিশ দিয়েছেন মহারাষ্ট্র বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার নরহরি জিরওয়াল।
দলত্যাগ রোধ আইন অনুযায়ী কেন এই ১৬ জনের বিধায়কের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে তাঁদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
আগামীকাল সোমবারের মধ্যে এই বিধায়কদের প্রত্যেককে সশরীর হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুম্বাইয়ে হাজির হয়ে তাঁদের জবাবদিহি করতে হবে। তা না করলে তাঁদের সদস্যপদ খারিজ করার পথে হাঁটতে পারেন মহারাষ্ট্র বিধানসভার উপাধ্যক্ষ। তেমনটা হলে মামলা গড়াতে পারে আদালত পর্যন্ত।
সম্প্রতি শিন্ডে তাঁর ২১ জন অনুগামী ও একজন স্বতন্ত্র বিধায়ককে নিয়ে সবার অলক্ষ্যে পৌঁছে যান বিজেপিশাসিত গুজরাটের সুরাত শহরে। ক্রমেই তাঁর সঙ্গীসংখ্যা বাড়তে থাকে। পরে তাঁরা গুজরাট ছেড়ে চলে যান আরেক বিজেপিশাসিত রাজ্য আসামের গুয়াহাটিতে।
গুয়াহাটিতে গিয়ে বিদ্রোহীরা দাবি করেন, দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন বিধায়কের সমর্থন তাঁদের রয়েছে। তাঁরা চান, শিবসেনা তার ‘অস্বাভাবিক মিত্র’ কংগ্রেস ও এনসিপি ছেড়ে বেরিয়ে আসুক। শিবসেনা তার ‘স্বাভাবিক মিত্র’ বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার চালাক।
শিন্ডে অনুগামীদের দাবি, ‘অস্বাভাবিক’ জোটের কারণে শিবসেনার ক্ষতি হচ্ছে। লাভ হচ্ছে কংগ্রেস-এনসিপির। শিবসেনা বরাবর হিন্দুত্ববাদী ও জাতীয়তাবাদী দল। হিন্দুত্ববাদ থেকে সরে এসে শিবসেনা তার চরিত্র হারিয়ে ফেলছে।
মহারাষ্ট্র বিধানসভার ভোট হয় ২০১৯ সালের অক্টোবরে। ২৮৮ আসনবিশিষ্ট বিধানসভায় বিজেপি পায় ১০৬ আসন। শিবসেনা পায় ৫৬ আসন। শারদ পাওয়ারের এনসিপি পায় ৫৪ আসন। আর কংগ্রেস পায় ৪৪ আসন।
মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিতে অনড় থেকে শিবসেনা শেষ পর্যন্ত বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে এনসিপি ও কংগ্রেসের সমর্থনে গঠন করে ‘মহা বিকাশ আগাড়ি’ জোট সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হন শিবসেনার প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। আড়াই বছর কাটতে না কাটতেই এ সরকার বিদ্রোহের মুখে পড়েছে।