ফিলিস্তিন বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ও আল–জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহের নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি ওঠে
ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনি সম্প্রচারকর্মী ও সাংবাদিকদের জন্য পরিচালিত বার্ষিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির নাম আল-জাজিরার নিহত সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহের নামে করার ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। গত ১১ মে দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর এক অভিযান চলাকালে সংবাদ সংগ্রহের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি নিহত হন। ভারতের দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে এসব কথা জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক গতকাল মঙ্গলবার এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, একটি শতাব্দীতে সাংবাদিকতায় ২৫ বছরের অনন্য কর্মজীবনের অধিকারী ছিলেন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত আমেরিকান আবু আকলেহ। তিনি ছিলেন আরব নারীদের জন্য পথিকৃৎ এবং মধ্যপ্রাচ্য ও সারা বিশ্বের সাংবাদিকদের জন্য একজন রোল মডেল।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি দূত রিয়াদ মনসুর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে একটি চিঠি লিখেন। এতে এই সাহসী ও অনুকরণীয় নারী সাংবাদিকের প্রতি সম্মান জানাতে বিশ্বব্যাপী সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি দৃঢ় সমর্থনের অংশ হিসেবে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির নতুন নাম দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন

সাংবাদিক শিরিন হত্যার ঘটনায় আইসিসিতে মামলার প্রস্তুতি

এই চিঠির জবাবে গুতেরেস বলেন, আবু আকলেহের মৃত্যুতে তিনি খুবই মর্মাহত। এই মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে তিনি এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানান।

জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব গ্লোবাল কমিউনিকেশন এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে। আবু আকলেহের সাহসিকতা ও অর্জনের প্রতি সম্মান জানাতে ‘ট্রেইনিং প্রোগ্রাম অব প্যালেস্টিনিয়ান ব্রডকাস্টার্স অ্যান্ড জার্নালিস্টস’-এর নাম ‘দ্য শিরিন আবু আকলেহ ট্রেইনিং প্রোগ্রাম অব প্যালেস্টিনিয়ান ব্রডকাস্টার্স অ্যান্ড জার্নালিস্টস’ করার প্রস্তাবকে তারা স্বাগত জানিয়েছে বলে জানান তিনি।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব নেওয়ার পর ১৯৯৫ সালে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ওই প্রস্তাবে ফিলিস্তিনি জনগণকে গণমাধ্যম উন্নয়ন খাতে সহায়তা প্রদানে জাতিসংঘের পাবলিক ইনফরমেশন বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক এই কর্মসূচিতে অংশ করেছেন।

আল-জাজিরা জানায়, ১১ মে পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর একটি অভিযানের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন আবু আকলেহ (৫১)। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে তিনি নিহত হন বলে জানান ঘটনাস্থলে থাকা তাঁর সহকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। সাংবাদিক শিরিনের নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি ওঠে।

আরও পড়ুন

সাংবাদিক শিরিন হত্যায় এফবিআইয়ের তদন্ত চাইছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা

ইসরায়েল জানিয়েছে, যে বন্দুকের গুলিতে শিরিন নিহত হয়েছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সম্ভবত সেটি শনাক্ত করতে পেরেছে। তবে তারা বলছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বুলেটটি হস্তান্তর না করলে তারা বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারবে না।

এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে। আস্থাহীনতার অতীত অভিজ্ঞতার কারণে তারা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে বুলেট হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।