বিক্ষোভের সময় ২০০’র বেশি মৃত্যু হয়েছে, স্বীকার করল ইরান সরকার

নিরাপত্তা হেফাজতে ইরানের নারী মাসা আমিনির মৃত্যুর পর তেহরানে বিক্ষোভ শুরু হয়
ছবি: রয়টার্স

ইরানজুড়ে গত সেপ্টেম্বর থেকে চলা ব্যাপক অস্থিরতায় ২০০’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে প্রথমবারের মতো দেশটির নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গতকাল শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য দিয়েছে ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা পরিষদ। খবর আল–জাজিরা ও রয়টার্সের।

তবে গতকাল ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান নাগরিকদের অধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। তিনি দেশটির বর্তমান শাসনকাঠামোর পক্ষেও তাঁর মত তুলে ধরেছেন।

আরও পড়ুন

নিরাপত্তা হেফাজতে এক নারীর মৃত্যুর পর গত সেপ্টেম্বর থেকে ইরানজুড়ে শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ। এরপর এই প্রথম ২০০’র বেশি মানুষের নিহত হওয়ার কথা জানাল ইরান সরকার।

তবে জাতিসংঘ ও একাধিক মানবাধিকার সংস্থার দাবি, তিন মাসে পড়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভ এরই মধ্যে ৩০০’র বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী মাসা আমিনির মৃত্যু হয় সেপ্টেম্বরে। এরপর এ মাসের শেষদিকে ইরানের অসংখ্য শহরে হিজাববিরোধী বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটে। পরে একপর্যায়ে তা সরকারবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভে রূপ নেয়। এতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিলে এবারের বিক্ষোভ ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর দেশটির মোল্লাতন্ত্রের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়।

ঘরের বাইরে নারীরা বাধ্যতামূলক হিজাব পরার নীতি মানছেন কি না, তা দেখভালের দায়িত্ব নীতি-পুলিশের।

আরও পড়ুন

গতকাল দেওয়া এক বিবৃতিতে ইরানের স্বরাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ২০০’র বেশি নিহত ব্যক্তির মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। যাঁরা ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ রোধ করতে গিয়ে নিহত হন। এ ছাড়া দাঙ্গাকারী ও সাধারণ মানুষও নিহত হয়েছেন বলে বিবৃতিতে বলা হয়।

ইরানের বিক্ষোভে প্রাণহানি নিয়ে গতকালের বিবৃতির আগে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) শীর্ষ জেনারেল আমির আলী হাজি জাহেদ বলেন, অসন্তোষের সময় ৩০০’র বেশি মানুষ ‘শহীদ বা নিহত’ হয়েছেন।

আরও পড়ুন

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ইরানের কর্তৃপক্ষ পর্বতারোহী এলনাজ রেকাবির পৈতৃক বাড়ি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। অক্টোবরে একটি আন্তর্জাতিক পর্বতারোহণ প্রতিযোগিতায় এলনাজকে মাথায় স্কার্ফ পরা ছাড়াই খেলতে দেখা গিয়েছিল। অনেকেই একে বিক্ষোভের প্রতি তাঁর সমর্থন বলে ধরে নিলেও এলনাজ পরে বলেছিলেন, মাথায় স্কার্ফ না পরা ‘উদ্দেশ্যমূলক ছিল না’।

ইরানের উত্তর–পশ্চিম প্রদেশ জানজানের বিচার বিভাগের প্রধান গতকাল রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, এলনাজের পরিবার স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি পেতে ব্যর্থ হওয়ায় চার মাস আগেই ওই ভিলাটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার আদেশ জারি হয়েছিল।