ইসরায়েল কি এবার সত্যিই জাতিসংঘের সদস্যপদ হারাতে পারে

জাতিসংঘ সনদের ৫ ও ৬ নম্বর অনুচ্ছেদ বিশ্ব সংস্থায় ইসরায়েলের সদস্যপদ স্থগিত বা বহিষ্কার করার আইনি ভিত্তি দেয়। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো এটিকে বাস্তবে অসম্ভব করে তুলছে। তবু গাজায় ইসরায়েলের জাতিগত নিধন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং নানা দেশের ওপর হামলার অভিযোগে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংগঠন এ দাবি তুলছে। প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর পর এখন ইসরায়েল সদস্যপদ হারাতে পারে কি না, জোরেশোরে উঠেছে সেই প্রশ্ন। জবাব জানা যাক, মিডল ইস্ট মনিটরে লেখা মোহাম্মদ ইউসেফের মতামত থেকে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তব্য দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ছবি: এএফপি

২০২৫ সালের ২৪ নভেম্বর চিলির বেশ কয়েকটি নাগরিক সংগঠন জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের দাবি তুলে একটি প্রচারাভিযান শুরু করেছে। তারা জাতিসংঘ সনদের ৬ নম্বর অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলছে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও জাতিসংঘের অনেক প্রস্তাবনা ধারাবাহিক এবং পদ্ধতিগতভাবে লঙ্ঘন করছে। গাজায় চলমান গণহত্যা ও মানবিক সংকটের পটভূমিতে এ দাবি তুলেছে তারা।

জাতিসংঘ সনদের ৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘জাতিসংঘের যেকোনো সদস্যরাষ্ট্র যদি ধারাবাহিকভাবে সনদের মূলনীতি লঙ্ঘন করে, তবে নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশের ভিত্তিতে সাধারণ পরিষদ সেই রাষ্ট্রকে জাতিসংঘ থেকে বহিষ্কার করতে পারে।’

তবে এ ধরনের দাবি এবারই প্রথম নয়। গত সেপ্টেম্বরে কাতারে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বিমান হামলার পর পাকিস্তানও জাতিসংঘে দেশটির সদস্যপদ স্থগিত বা বহিষ্কার করার দাবি তোলে। পাকিস্তান বলেছে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক শান্তি–নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। পাকিস্তানের জাতিসংঘ দূত সতর্ক করেন, ইসরায়েলের এ ধরনের কর্মকাণ্ড আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক শৃঙ্খলার জন্য বিপজ্জনক।

একইভাবে দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ বহুবার ইসরায়েলের সদস্যপদ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও জাতিসংঘের স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘন করেছে এবং বিশ্ব সংস্থাকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

জাতিসংঘ সনদের দুটি অনুচ্ছেদে সদস্যরাষ্ট্রের পদ স্থগিত বা বহিষ্কার করার বিধান রয়েছে। ৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বহিষ্কার, আর ৫ নম্বরে সদস্যপদ স্থগিত করা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

পাকিস্তান বলেছে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক শান্তি-নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। পাকিস্তানের জাতিসংঘ দূত সতর্ক করেন, ইসরায়েলের এ ধরনের কর্মকাণ্ড আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক শৃঙ্খলার জন্য বিপজ্জনক।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে জাতিসংঘ গঠনের পর থেকে সনদের ৫ ও ৬ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীন কোনো দেশের সদস্যপদ স্থগিত বা বহিষ্কার করা হয়নি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী নীতির কারণে সাধারণ পরিষদের ক্রেডেনশিয়াল কমিটি দেশটির প্রতিনিধিদলের পরিচয়পত্র বাতিলের সুপারিশ করলে তারা সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে পারেনি।

আরও পড়ুন

ইতিহাসে ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে বহিষ্কারের কয়েকটি চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক চাপ ও ভেটো হুমকির কারণে সব কটিই ব্যর্থ হয়। প্রথম বড় প্রচেষ্টা ছিল ১৯৭৫ সালে, যখন আলজেরিয়া ও সিরিয়া ইসরায়েলের সদস্যপদ স্থগিত করতে যৌথ উদ্যোগ নেয়। এ জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ প্রয়োজন ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর হুমকিতে উদ্যোগটি থেমে যায়। পরে ইসরায়েলকে বিচ্ছিন্ন করতে বিকল্প পথ খোঁজা হয়। ফলস্বরূপ ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ প্রস্তাব ৩৩৭৯ পাস করে। প্রস্তাবটিতে জায়নিজমকে (ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে জাতীয়তাবাদী ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন) ‘বর্ণবাদ ও জাতিগত বৈষম্যের একটি রূপ’ ঘোষণা করা হয়।

৩৪টি মুসলিম দেশ ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন (ইউএসএসআর) মিলে আরেকটি প্রচেষ্টা চালায়। তারা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ক্রেডেনশিয়াল কমিটিকে চিঠি পাঠিয়ে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের দাবি করে।

চিঠিতে বলা হয়, ‘ইসরায়েল ধারাবাহিকভাবে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। উপরন্তু ফিলিস্তিন ও মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবনাগুলোকে ইসরায়েলের অবমাননা করা ও চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়ও আমরা আবার তুলে ধরতে চাই।’

আরও পড়ুন

এসব দেশ আরও বলেছে, ইসরায়েল জাতিসংঘ সনদের প্রতি অমর্যাদা দেখাচ্ছে এবং দায়িত্ব এড়িয়ে চলছে। তাই এটি ‘শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র’ নয়, যা জাতিসংঘ সদস্যপদের জন্য প্রয়োজন। তবে ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থনের কারণে প্রচেষ্টাটি ব্যর্থ হয়। প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পায়নি তারা।

২০১৮ সালে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেট ‘নেশন-স্টেট বিল’ পাস করে। বিলের ১(ক) অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘ইসরায়েলের ভূমি ইহুদি জনগণের ঐতিহাসিক মাতৃভূমি।’ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ আইনকে ‘অবৈধ, বর্ণবাদী ও বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দেন। পরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে বহিষ্কারের উদ্যোগ নেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের তহবিল বন্ধের হুমকি দিলে এ উদ্যোগও থেমে যায়।

ইসরায়েল ধারাবাহিকভাবে জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। উপরন্তু ফিলিস্তিন ও মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবনাগুলোকে ইসরায়েলের অবমাননা করা ও চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়ও আমরা আবার তুলে ধরতে চাই।

এসব ইতিহাস থেকে বোঝা যায়, ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে বহিষ্কারের দাবি আইনি ভিত্তি রাখে। কিন্তু রাজনৈতিক চাপ ও প্রাতিষ্ঠানিক বাধা এটিকে বাধাগ্রস্ত করছে। কোনো বাস্তব প্রস্তাব কার্যকর করার জন্য প্রয়োজন—নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ও পাঁচ স্থায়ী সদস্যের (পি–ফাইভ) কারও ভেটো না দেওয়া। বর্তমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক অবস্থান এবং কিছু পি–ফাইভ দেশের ইসরায়েলকে সমর্থনের বিবেচনায় এ ধরনের প্রস্তাব পাস হওয়ার সম্ভাবনা কম।

আরও পড়ুন

তবু আইনি প্রক্রিয়ার উপস্থিতি ও গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়ে বৈশ্বিক ক্ষোভ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এ দাবির প্রতীকী ও রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক। এখনই বহিষ্কার করা সম্ভব না হলেও এ দাবিকে এগিয়ে নেওয়া আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলকে বিচ্ছিন্ন করার, তার সুনামহানিতে চাপ সৃষ্টি ও ধাপে ধাপে বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ করার কৌশলের অংশ হতে পারে।

জাতিসংঘ সনদের ৫ ও ৬ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো রাষ্ট্রের সদস্যপদ স্থগিত বা বহিষ্কার করা কঠিন। কারণ, এটি নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে যেতে এবং সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর মুখোমুখি হতে হয়। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে রক্ষা করতে ৫১ বার ভেটো ব্যবহার করেছে। তাই সাধারণ পরিষদের কাঠামোর মধ্যে কাজ করার সুযোগ তুলনামূলক বেশি, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে বহু দেশের ফিলিস্তিনের পক্ষে স্পষ্ট অবস্থান ও সমর্থনের কারণে।

২০২৪ সালের মে মাসে সাধারণ পরিষদ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ফিলিস্তিনিদের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার পক্ষে প্রস্তাব পাস করে। ভোটের ফলাফল ছিল—পক্ষে ১৪৩, বিপক্ষে ৯, অনুপস্থিত ২৫। একইভাবে ওই বছর সেপ্টেম্বরে সাধারণ পরিষদ ইসরায়েলকে তার অবৈধ দখল অবিলম্বে শেষ করতে বলে একটি প্রস্তাব পাস করে। ভোটের ফলাফল ছিল—পক্ষে ১২৪, বিপক্ষে ১৪, অনুপস্থিত ৪৩। আবার গত ১২ সেপ্টেম্বর (ফিলিস্তিন–ইসরায়েল সংকটে) দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান প্রস্তাব সমর্থনকারী ‘নিউইয়র্ক ঘোষণা’ ১৪২টি রাষ্ট্র অনুমোদন করে। বিপক্ষে ভোট পড়ে মাত্র ১০টি এবং অনুপস্থিত থাকে ১২টি দেশ।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাম্প্রতিক অধিবেশনে নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা ওয়াকআউট করেন। এতে খালি হয়ে যায় অধিবেশন কক্ষের বেশির ভাগ আসন
ছবি: রয়টার্স

দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ইসরায়েলের প্রতিনিধিদলের পরিচয়পত্রও বাতিলের সুপারিশ করে সাধারণ পরিষদের ক্রেডেনশিয়াল কমিটিতে চিঠি পাঠিয়ে তা দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের মাধ্যমে বাতিল করা যেতে পারে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনিদের অধিকারের জন্য বিশ্বব্যাপী সমর্থন বৃদ্ধির কারণে এ প্রক্রিয়ার সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

আরেকটি উপায় হলো ‘ইউনাইটিং ফর পিস’ প্রস্তাবের ব্যবহার। ১৯৫০ সালের ৩ নভেম্বর (কোরিয়া যুদ্ধের সময়) এটি গৃহীত হয়েছিল। নিরাপত্তা পরিষদ ভেটোর কারণে যদি অচল হয়ে যায়, তখন সাধারণ পরিষদকে ক্ষমতাবান করার উদ্দেশ্য ছিল। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ পরিষদ বিশেষ জরুরি অধিবেশন ডেকে শান্তির জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, এমনকি সামরিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারে।

ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড দখল করে নিজেকে রাষ্ট্র ঘোষণা করার পর থেকে ইসরায়েলকে বারবার যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নিধন ও জাতিসংঘ সনদ লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য বড় হুমকি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত এক লাখের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। ১৯ লাখের বেশি গাজাবাসী এবং পশ্চিম তীরের হাজার হাজার মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে।

আরও পড়ুন

গত এক বছরের কম সময়ে ইসরায়েল লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন, কাতার, ইরান, তিউনিসিয়া ও দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডসহ সাতটি দেশ ও অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে হামলা চালিয়েছে। পশ্চিম তীর এবং সিরিয়ায় দখলদারি ও অবৈধ ইহুদি বসতি সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছে। আইন করে পশ্চিম তীর দখল করার ঘোষণা এবং অনির্দিষ্টকালীন সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখার পরিকল্পনা করছে।

ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে বহিষ্কারের প্রথম বড় প্রচেষ্টা ছিল ১৯৭৫ সালে, যখন আলজেরিয়া ও সিরিয়া ইসরায়েলের সদস্যপদ স্থগিত করতে যৌথ উদ্যোগ নেয়। এ জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশ প্রয়োজন ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর হুমকিতে উদ্যোগটি থেমে যায়।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এখনো উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক চাপ বা যৌথ নিষেধাজ্ঞা নেই। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, অর্থাৎ রাষ্ট্র এবং এনজিওগুলোর সম্ভব সব উপায়ে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করা উচিত। ইসরায়েলের সদস্যপদ স্থগিত বা তাকে বহিষ্কার করার দাবি শুধু কথার কথাই নয়, এটি জাতিসংঘ সনদের ৫ ও ৬ নম্বর অনুচ্ছেদের স্পষ্ট ভাষার ওপর ভিত্তি করেও প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

ইসরায়েলের বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের দীর্ঘ বৈধ সংগ্রামের এ সংকটময় সময়ে জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কার, সদস্যপদ স্থগিত বা সাধারণ পরিষদে তাদের প্রতিনিধিদলের পরিচয়পত্র বাতিলের দাবি শুধু ন্যায়সংগত নয়, চলমান গণহত্যা এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করার জন্যও অপরিহার্য। জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও রাষ্ট্রগুলোর দায়িত্ব হলো তাদের কূটনৈতিক প্রতিশ্রুতিকে কার্যকর পদক্ষেপে রূপ দেওয়া—ইসরায়েলকে রাজনৈতিক, আইনি, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা এবং জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করা।

অনুবাদ: মো. আবু হুরাইরাহ্‌