ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘হারেৎজ’ বর্জনের ঘোষণা নেতানিয়াহু সরকারের
ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথমবারের মতো দেশটির প্রভাবশালী সংবাদপত্র ‘হারেৎজ’ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। গাজা যুদ্ধে সংবাদমাধ্যমটি ‘শত্রুদের’ সমর্থন করছে—এমন অভিযোগ তুলে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পরিচালিত রেডিও স্টেশন ‘গালেই জাহাল’-এর তথ্যমতে, বিজ্ঞাপন ও সম্পাদকীয়—উভয় ক্ষেত্রেই হারেৎজের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সব মন্ত্রণালয়, সরকারি বিজ্ঞাপনী সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত কোম্পানিগুলোকে এ সংবাদপত্রের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রেডিও স্টেশনটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে নেওয়া এক সরকারি সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এ বর্জন প্রক্রিয়া কার্যকর করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম কার্যালয়গুলোর দাপ্তরিক অ্যাকাউন্ট থেকেও হারেৎজের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েল সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধ চলাকালীন হারেৎজ এমন কিছু সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে, যা ‘বিশ্বদরবারে ইসরায়েল রাষ্ট্রের বৈধতা ও এর আত্মরক্ষার অধিকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে’।
সব মন্ত্রণালয়, সরকারি বিজ্ঞাপনী সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে পরিচালিত কোম্পানিগুলোকে এ সংবাদপত্রের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইসরায়েলের একটি স্বীকৃত সংবাদপত্রের প্রকাশক খোদ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানাবেন এবং যুদ্ধের মধ্যে রাষ্ট্রের শত্রুদের সমর্থন করবেন—সরকার এমন পরিস্থিতি মেনে নেবে না।’ এ যুক্তিতে পত্রিকাটির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন এবং তাতে কোনো ধরনের সরকারি বিবৃতি প্রদান না করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদপত্র ইয়েদিওত আহরোনোতের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির সংসদ নেসেটে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপ–সংক্রান্ত একটি বিল পাসের প্রায় এক মাস পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
ইসরায়েলের একটি স্বীকৃত সংবাদপত্রের প্রকাশক খোদ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানাবেন এবং যুদ্ধের মধ্যে রাষ্ট্রের শত্রুদের সমর্থন করবেন—সরকার এমন পরিস্থিতি মেনে নেবে না।
হিব্রু ভাষার দৈনিকটি জানিয়েছে, ‘গণমাধ্যম ব্যবস্থা সংস্কার’ শিরোনামের বিলটি উত্থাপন করেন যোগাযোগমন্ত্রী শলোমো কারহি। বিলটি নেসেটে প্রাথমিক ভোটে পাস হয়েছে।
নতুন এ আইন ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারভ-মিয়ারার ক্ষমতা কমিয়ে রাব্বিনিক আদালতের (ধর্মীয় আদালত) ক্ষমতা আরও বাড়াবে। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ বিলের বিরোধিতা করে সতর্ক করেছেন, এটি ইসরায়েলে মুক্ত সংবাদমাধ্যমের ভাবমূর্তির জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে।