একনজর: দিনভর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে যা ঘটল

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস আরও দুই বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। এরপরও গাজায় ইসরায়েলের বিরামহীন বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণের রাশ টানার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ইসরায়েলি হামলায় ২৪ ঘণ্টায় ৪৩৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ নিয়ে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে , যাদের দুই হাজারই শিশু। একনজরে দেখে নেওয়া যাক এ সংঘাতের গতকাল সোমবারের আলোচিত পাঁচ খবর।

মুক্তি পাওয়া দুই ইসরায়েলি নুরিত কুপার (৭৯) ও ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ (৮৫)
ছবি: রয়টার্স

ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস দুই ইসরায়েলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে। তাঁরা হলেন—নুরিত কুপার (৭৯) ও ইয়োশেভেদ লিফশিৎজ (৮৫)। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এই দুই বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে গতকাল হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা জানিয়েছেন। এর আগে গত শুক্রবার দুই মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দেয় হামাস। তাঁরা হলেন—জুডিথ রানান (৫৯) ও তাঁর মেয়ে নাতালি রানান (১৮)। হামাসের হাতে এখনো দুই শতাধিক বন্দী রয়েছে বলে ইসরায়েল জানিয়েছে।

ইসরায়েলের হামলা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ছোট্ট শিশুটির। দাফনের আগে শিশুটির মরদেহ কোলে এক ফিলিস্তিনি। গতকাল গাজার খান ইউনিসে
ছবি: রয়টার্স

গাজায় ইসরায়েলের হামলা যে কতটা নারকীয়, তা বোঝা যায় হতাহত মানুষের সংখ্যার দিকে তাকালেই। গত ১৭ দিনে গাজায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৮৭–তে। তাদের মধ্যে ২ হাজার ৫৫ জন বা ৪০ শতাংশই শিশু। আর ১ হাজার ১১৯ জন নারী। অনেকে এখনো হামলায় বিধ্বস্ত বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে পড়ে আছে।

ইসরায়েলি হামলায় গুরুতর আহত এক ফিলিস্তিনি ও তাঁর ছেলে গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের মেঝেতে বসে আছেন। ২৩ অক্টোবর
ছবি: রয়টার্স

গাজায় বিমান থেকে নির্বিচার বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। শুধু অব্যাহত নয়, হামলা আরও জোরদার করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর হামলার ঘটনায় আরও অন্তত ৪৩৬ জন নিহত হয়েছে। গত রোববার রাতের হামলাকে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘাতে সবচেয়ে ভয়াবহ বলেছেন গাজার বাসিন্দারা।

পশ্চিম তীরের বাসিন্দা এক কিশোরকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছেন ইসরায়েলি সেনারা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

দখল করা পশ্চিম তীরের ওয়াদি আস-সাইক গ্রাম থেকে ইসরায়েলের সেনা ও অবৈধভাবে বসতি স্থাপনকারী একদল ইসরায়েলি অস্ত্রের মুখে ১২ অক্টোবর হাত–পা বেঁধে তিন ফিলিস্তিনিকে ধরে নিয়ে যান। পরে দিনভর তাঁদের ওপর চলে অকথ্য নির্যাতন। ভয়াবহ সে অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তাঁরা বলেছেন, হাত বাঁধার পর থেকেই বেধড়ক মারধর করা হতে থাকে তাঁদের। খুলে নেওয়া হয় তাঁদের পরনের জামাকাপড়। নগ্ন করার পর তোলা হয় ছবি। তাঁদের মধ্যে দুজনের শরীরে প্রস্রাবও করে দেওয়া হয়। সিগারেটের আগুনে দেওয়া হয় ছ্যাঁকা।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু
ফাইল ছবি

গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার মধ্যেই চলছে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হুমকি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছেন, গাজায় হামলা বন্ধ না করলে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারাও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন।