গাজা নিয়ে নিজস্ব নীতির সমালোচনা ইউরোপ-আমেরিকার ৮০০ সরকারি কর্মকর্তার

ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে প্ল্যাকার্ড হাতে এক ফিলিস্তিন-সমর্থক। লন্ডন, যুক্তরাজ্যফাইল ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের গাজায় আন্তর্জাতিক আইনের ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ হচ্ছে। আর এ পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলোর সরকার কিছুই করতে পারছে না। গাজা নিয়ে নিজ নিজ সরকারের নীতির সমালোচনা করে এমন কথাই বলেছেন পশ্চিমা দেশগুলোর আট শতাধিক সরকারি কর্মকর্তা।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর এই সরকারি কর্মকর্তারা একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। ‘ট্রান্সআটলান্টিক স্টেটমেন্ট’ নামে ওই বিবৃতির একটি অনুলিপি বিবিসির হাতে এসেছে।

আরও পড়ুন

বিবৃতিতে পশ্চিমা সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, তাঁদের নিজ দেশের সরকার ‘চলতি শতকে সবচেয়ে খারাপ মানবিক বিপর্যয়গুলোর একটিতে’ জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এরপরও তাঁদের দেওয়া বিশেষজ্ঞ পরামর্শ উপেক্ষা করা হয়েছে।

পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোয় অনেকেই গাজা নিয়ে ইসরায়েলি নীতির বিরোধী। পশ্চিমা সরকারি কর্মকর্তাদের এই বিবৃতি সেটার সর্বশেষ নজির।

বিবৃতিতে সই করেছেন—এমন একজন ব্যক্তি মার্কিন সরকারে ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বিবিসিকে বলেন, মার্কিন সরকার তাঁদের পরামর্শ ‘ক্রমাগতভাবে উপেক্ষা’ করছে।

অভিযোগ জানিয়ে ওই সরকারি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যাঁরা ওই অঞ্চল (ইসরায়েল-ফিলিস্তিন) সম্পর্কে বেশ ভালো বোঝেন, ওই অঞ্চলের ঘটনাবলির গতিপ্রকৃতি নিয়ে জানেন, তাঁদের কথা শোনা হচ্ছে না।’

আরও পড়ুন

ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কোনো কিছু প্রতিরোধ করতে শুধু ব্যর্থই হচ্ছি না, বরং তাতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ছি। অন্য যেকোনো পরিস্থিতির চেয়ে গাজায় চলমান পরিস্থিতির মৌলিক তফাত এটাই।

বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের ১১টি দেশের সরকারি কর্মকর্তারা সই করেছেন।

এতে বলা হয়েছে, গাজায় সামরিক অভিযান চালাতে গিয়ে তা কোনো সীমানায় সীমাবদ্ধ রাখেনি ইসরায়েল। এর ফলে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মানবিক সহায়তা দেওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। অনাহার আর ক্রমান্বয়ে মৃত্যুর পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছে হাজারো বেসামরিক মানুষকে।

আরও পড়ুন

নিজ নিজ সরকারের সমালোচনা করে বিবৃতিতে পশ্চিমা সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন, যুদ্ধাপরাধ, এমনকি জাতিগত নির্মূল বা গণহত্যার জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে আমাদের সরকারের নীতি।’

বিবৃতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবসরপ্রাপ্ত একজন রাষ্ট্রদূত বিবিসিকে বলেন, একাধিক পশ্চিমা দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের এমন সমন্বয় অভূতপূর্ব।

আলজেরিয়া ও সিরিয়ায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন রবার্ট ফোর্ড। তিনি বলেন, ‘৪০ বছর ধরে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কাজ করছি। সেই কাজের অভিজ্ঞতায় বলা যায়, এই বিবৃতি অতুলনীয়।’

আরও পড়ুন