গাজা সংঘাত ঘিরে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ছে

গাজায় ইসরায়েলের বিমান থেকে ফেলা বোমায় জ্বলছে ভবন। ফিলিস্তিনফাইল ছবি: এএফপি

ফিলিস্তিনের গাজায় ২০২৪ সালজুড়ে হামলা চালাতে চায় ইসরায়েল। এ নিয়ে নানা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন দেশটির কর্মকর্তারা। তবে গত তিন মাসের সংঘাতেই ইসরায়েলের ওপর ক্ষুব্ধ আন্তর্জাতিক অঙ্গন। হামলা বন্ধে ইসরায়েলের ওপর চাপ আসছে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। চাপ রয়েছে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকেও।

গাজা পরিস্থিতি নিয়ে চতুর্থ ধাপের মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার তেল আবিবে পৌঁছান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এর আগে দুই দিনে জর্ডান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব ভ্রমণ করেন তিনি। চলমান সংঘাত যেন মধ্যপ্রাচ্যে আরও ছড়িয়ে না পড়ে, সেই লক্ষ্যেই ব্লিঙ্কেনের এই সফর।

ইসরায়েলে পৌঁছানোর পর আজ মঙ্গলবার ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাঁরা যদি একটি কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি করে দেন, তাহলে আরব প্রতিবেশীদের কাছ থেকে এখনো গ্রহণযোগ্যতা অর্জনে সুযোগ রয়েছে ইসরায়েলের।

এ ছাড়া সংঘাতের মধ্যে গাজার বেসামরিক মানুষকে সুরক্ষা দিতে এবং তাঁদের কাছে আরও ত্রাণ পৌঁছানোর সুযোগ করে দিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ দেবেন বলে আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্লিঙ্কেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে ইসরায়েলবিরোধী এক বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, গাজা থেকে ইসরায়েলের কিছু সেনা প্রত্যাহারের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। গাজা সংঘাতে ইসরায়েলের পাশে থাকা বাইডেন সম্প্রতি এটাও বলেছিলেন যে উপত্যকাটিতে নির্বিচার বোমা হামলা করা হচ্ছে।

এদিকে ব্লিঙ্কেনের কাছে গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এসপিএর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের মানুষের বৈধ অধিকার নিশ্চিত করার এবং এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ব্লিঙ্কেনকে জানিয়েছেন সালমান।

আরও পড়ুন

আরও হামলা, আরও ফিলিস্তিনি নিহত

গতকাল সোমবার রাত ও আজ গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আজ গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকাটিতে হামলায় ১২৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৩ হাজার ২১০। ইসরায়েলের হামলায় আহত হয়েছেন সেখানকার ৫৯ হাজার ১৬৭ বাসিন্দা।

বিগত ২৪ ঘণ্টায় শুধু মধ্য গাজার আল-আকসা হাসপাতালেই ৫৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফার খবরে বলা হয়েছে, মধ্য গাজা ছাড়াও দক্ষিণে হামলা হয়েছে। বোমাবর্ষণ করা হয়েছে মাঘাজি ও আল-বুরেজি শরণার্থীশিবিরে। আর উত্তর গাজায় জাবালিয়া ও বেইত হানুন এলাকায় ইসরায়েলের হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন।

গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগেরি বলেছেন, মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে ‘কঠিন লড়াই’ চলছে ইসরায়েলের সেনাদের। ২০২৪ সালজুড়েও উপত্যকাটিতে লড়াই চালিয়ে যাবেন তাঁরা।

আরও পড়ুন

ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর হামলা

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দেশটির সামরিক বাহিনীর কার্যালয়ে আজ ড্রোন হামলার দাবি করেছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটির দুই নেতাকে হত্যার জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। হামলার বিষয়টি স্বীকার করে ইসরায়েলের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

এদিকে আজ দক্ষিণ লেবাননে একটি গাড়িতে হামলায় হিজবুল্লাহর তিন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া লেবানন সীমান্তের কিলা গ্রামে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।

আরও পড়ুন