ভুয়া তথ্য প্রচার
দেশে দেশে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে ‘টিম জর্জ’
দ্য কনসোর্টিয়াম অব জার্নালিস্টের আট মাসের অনুসন্ধানে ‘টিম জর্জ’ নামে ইসরায়েলি দলটির অনৈতিক কাজের নানা দিক বেরিয়ে এসেছে। যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান, ফ্রান্সের লা মঁদে, দেল স্পিগ্যাল, এল প্যারিসসহ বিশ্বের ৩০টি গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরিতে কাজ করেছেন। ছদ্মবেশে টিম জর্জের কাছে যান রেডিও ফ্রান্স, হারেৎস ও দ্য মার্কারের তিন সাংবাদিক। এতে সমন্বয় করেছে অলাভজনক ফরাসি প্রতিষ্ঠান ফরবিডেন স্টোরিজ। তিন সাংবাদিকের সঙ্গে কথাবার্তার গোপন ভিডিও ফুটেজে উঠে এসেছে টিম জর্জের নানা কর্মকাণ্ড।
ইসরায়েলি নাগরিক তাল হানানের (৫০) নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে ‘টিম জর্জ’। হ্যাকিং, নাশকতা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে বিশ্বের প্রায় ৩৩টি দেশে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে তারা। প্রায় দুই দশক ধরে এসব কাজ করে যাচ্ছে দলটি।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ভুয়া তথ্যকে অস্ত্র বানিয়ে টিম জর্জ কীভাবে গোপনে বিশ্বব্যাপী নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে। তারা এতটাই দক্ষতার সঙ্গে কাজটি করে যে ভুয়া তথ্যের উৎস সম্পর্কে কেউই জানতে পারে না। করপোরেট দুনিয়ায়ও তারা একইভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তাল হানান কাজ করেন ‘জর্জ’ ছদ্মনামে। টিম জর্জের কর্মকাণ্ড ও পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত কথা বলতে চাননি তিনি। তবে বলেছেন, ‘আমি অন্যায় কিছু করছি না।’
তিন সাংবাদিকের সঙ্গে সশরীর বৈঠকে হানান ও তাঁর দল বলেছে, জিমেইল ও টেলিগ্রাম হ্যাকিংসহ নানা কৌশলে কীভাবে তাঁরা প্রতিপক্ষের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেন। তাঁদের মূল কৌশল হচ্ছে প্রতিপক্ষের প্রচারকে নস্যাৎ বা নাশকতা সৃষ্টি করা।
ছদ্মবেশী তিন সাংবাদিককে হানান বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা, রাজনৈতিক দল ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে জনমত তৈরিতে তাঁরা কাজ করে থাকেন। আফ্রিকা, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপজুড়ে বিস্তৃত তাঁদের কাজ।
টিম জর্জের অত্যাধুনিক একটি সেবা হচ্ছে অ্যাডভান্সড ইমপ্যাক্ট মিডিয়া সলিউশনস (এআইএমএস)। এই সফটওয়্যার বিশ্বব্যাপী ৩০ হাজারের বেশি প্রোফাইল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এর মাধ্যমে টুইটার, লিঙ্কডইন, ফেসবুক, টেলিগ্রাম, জিমেইল, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবে হাজার হাজার ভুয়া প্রোফাইল বানিয়ে ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়। এদের আবার ‘অবতার’ বলছে টিম জর্জ। এমনকি কিছু কিছু অবতারের আবার অ্যামাজান ও এয়ারবিএনবিতে অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
টুইটারে এমনই একটি অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল নাম ক্যানাইলান। দেখতে সাধারণ ব্যবহারকারী মনে হয়। এই অ্যাকাউন্ট থেকে বাস্কেট বল থেকে শুরু করে ফুটবল নিয়ে টুইট করা হয়। বন্ধুসুলভ শ্বেতাঙ্গ এক ব্যক্তির ছবি দেওয়া প্রোফাইলের মানুষটির বাস শেফিল্ডে বলে উল্লেখ করা আছে। কিন্তু আদতে এটি কোনো মানুষের প্রোফাইল নয়, এটি ভুয়া প্রোফাইল। সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার চালাতে এআইএমএস সফটওয়্যার দিয়ে এই ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছে।
তিন সাংবাদিকের সঙ্গে সশরীর বৈঠকে হানান ও তাঁর দল বলেছে, জিমেইল ও টেলিগ্রাম হ্যাকিংসহ নানা কৌশলে কীভাবে তাঁরা প্রতিপক্ষের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেন। তাঁদের মূল কৌশল হচ্ছে প্রতিপক্ষের প্রচারকে নস্যাৎ বা নাশকতা সৃষ্টি করা। এমনকি অ্যামাজনের মাধ্যমে তাঁরা প্রতিপক্ষের রাজনীতিবিদের বাসায় সেক্স টয় পাঠিয়ে দেন, যাতে রাজনীতিবিদের স্ত্রী সন্দেহপ্রবণ হন যে তাঁর স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আছে।
টিম জর্জের পদ্ধতি আর কৌশল প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের পর বছর তারা নিজেদের প্ল্যাটফর্মে ভুয়া তথ্য প্রচারকারীদের প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে ভুয়া তথ্যের বৈশ্বিক বাজার বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের জন্যও বড় অশনিসংকেত।
টিম জর্জের এই কর্মকাণ্ড ফাঁস ইসরায়েলের জন্য বেশ বিব্রতকর হতে পারে। ইতিমধ্যে দেশে দেশে সাইবার-অস্ত্র বিক্রি নিয়ে কূটনৈতিকভাবে বেশ চাপের মধ্যে আছে তারা। বলা হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে হুমকির মুখে ফেলেছে তাদের আড়িপাতার প্রযুক্তি।
আমরা এখন আফ্রিকায় একটি নির্বাচন নিয়ে কাজ করছি। গ্রিস ও আরব আমিরাতে আমাদের দল রয়েছে। ৩৩টি নির্বাচনে কাজ করে ২৭টিতে সফল হয়েছি আমরা।হানান
গোপন ভিডিও ফুটেজ
রেডিও ফ্রান্স, ইসরায়েলি পত্রিকা হারেৎস ও হিব্রুভাষী দ্য মার্কার–এর সাংবাদিকেরা আফ্রিকার একটি দেশের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন—এমন পরিচয়ে টিম জর্জের কাছে প্রস্তাব নিয়ে যান। তাঁরা সেখানে নির্বাচন পেছাতে চান। গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এই তিন ছদ্মবেশী সাংবাদিকের সঙ্গে টিম জর্জের সদস্যদের বৈঠক হয়, যার ভিডিও গোপনে ধারণ করা হয়।
প্রথমে হানান ও তাঁর দলের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে মুখোমুখি হন তিন সাংবাদিক। পরে ইসরায়েলের তেল আবিব শহর থেকে ২০ মাইল দূরে ‘মোদি ইন’–এর শিল্প এলাকায় তাদের কার্যালয়ে সশরীর বৈঠক হয়।
হানান তাঁর দলকে ‘গ্র্যাজুয়েট অব গভর্নমেন্ট এজেন্সিজ’ বলে আখ্যায়িত করেন। বলেন, অর্থ, সামাজিক মাধ্যমে প্রচার এবং ‘মনস্তাত্ত্বিক লড়াই’য়ে দক্ষ তাঁর দল। বিশ্বব্যাপী তাঁদের অন্তত ছয়টি কার্যালয় রয়েছে। হানানের ভাই জোহার হানানসহ তাঁর দলের চারজন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। জোহারকে গ্রুপের প্রধান নির্বাহী বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
বৈঠকে হানান দাবি করেন, ‘আমরা এখন আফ্রিকায় একটি নির্বাচন নিয়ে কাজ করছি। গ্রিস ও আরব আমিরাতে আমাদের দল রয়েছে। ৩৩টি নির্বাচনে কাজ করে ২৭টিতে সফল হয়েছি আমরা।’
পরে হানান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে তাঁরা দুটি ‘বড় প্রকল্পে’ জড়িত হয়েছিলেন। তবে মার্কিন রাজনীতিতে তাঁরা সরাসরি জড়িত হননি।
টিম জর্জের সদস্যরা সাংবাদিকদের বলেন, নগদ অর্থ, বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সিসহ নানাভাবে তাঁরা পারিশ্রমিক নেন। নির্বাচনকে প্রভাবিত করার মতো কাজে তাঁরা ৬ মিলিয়ন থেকে ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড নিয়ে থাকেন।
অবশ্য ফাঁস হওয়া মেইলে দেখা যায়, আরও কম অর্থও নিয়ে থাকে হানানের দল। যেমন ২০১৫ সালের লাতিন আমেরিকার একটি দেশের নির্বাচনী প্রচারে তাদের আট সপ্তাহ কাজের প্রস্তাব দেয় লন্ডনভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা। প্রতিষ্ঠানটি তাঁদের ১ লাখ ৬০ হাজার ডলার প্রস্তাব করেছিল।
২০১৭ সালে হানানের দল আবার ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব পায়। এবার আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায়। সেখানে প্রতি মাসে ৪ থেকে ৬ লাখ ডলারের প্রস্তাব দেওয়া হয়। সংকট বিবেচনায় মক্কেল অর্থ বাড়াবে বলেও জানানো হয়। তবে সেই প্রস্তাব আর এগিয়েছিল কি না, জানা যায়নি।
আরেকটি ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, ২০১৫ সালে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার সঙ্গে গোপনে কাজ করেছিল টিম জর্জ। ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী আলেকজান্ডার নিক্স অবশ্য এসব নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
এআইএমএস নামে তাঁদের ভুয়া তথ্য প্রচারের যে সফটওয়্যার রয়েছে, সে প্রসঙ্গে হানান বলেন, এটি সফটওয়্যার ব্যবহারকারীকে ৫ হাজার পর্যন্ত বট তৈরির সুযোগ করে দেয়, যাতে ‘গণবার্তা’ পাঠানো ও ‘অপপ্রচার’ চালানো যায়। ১৭টি নির্বাচনে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে।
হানান বলেন, এটি তাঁদের নিজেদের তৈরি আধা স্বয়ংক্রিয় অবতার। যেকোনো ভাষায় এটি ব্যবহার করা যায়। চাহিদামতো দাম পেলে এই সফটওয়্যার বিক্রি করা হয়। ২০২২ সালে তাদের বট-ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যারের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়।
এআইএমএসের কার্যকারিতা দেখাতে গিয়ে হানান কয়েক ডজন অবতারকে স্ক্রল করে দেখান। এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে তাৎক্ষণিক কীভাবে ছবি, লিঙ্গ, জাতীয়তা উল্লেখ করে ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করা যায়, তা–ও দেখান। স্প্যানিশ, রুশ, এশিয়ান, মুসলিম—সবই আছে তাঁদের তৈরি প্রোফাইলে।
এআইএমএসের বট-এর তৎপরতা খুঁজতে গিয়ে যায়, বাণিজ্যিক বিতর্ক নিয়ে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, মেক্সিকো, সেনেগাল, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ প্রায় ২০টি দেশে সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া প্রচার চালানো হচ্ছে বেশি।
এর বাইরে তাঁদের ‘ব্লগার মেশিন’ নিয়ে কথা বলেন হানান। জানান, স্বয়ংক্রিয় ওয়েবসাইট তৈরির এই সফটওয়্যার এআইএমএস নিয়ন্ত্রিত সামাজিক মাধ্যমের প্রোফাইল দিয়ে দ্রুত ভুয়া খবর ছড়িয়ে দিতে পারে। একবার বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা গেলে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা সহজ হয়ে যায়।
টেলিগ্রাম কতটা নিরাপদ
হানান বলেন, ‘অনেক দেশের মানুষ মনে করে টেলিগ্রাম নিরাপদ। আজ আমি দেখাব এটি কতটা নিরাপদ।’ তিনি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে কেনিয়ার ২০১৫ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী উইলিয়াম রুটোর ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তার টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে ঢোকেন।
এই বার্তা আদানপ্রদানের অ্যাপ ব্যবহার করে নির্বাচনে প্রতিপক্ষ শিবিরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ফায়দা লোটা যায়— গর্বের সঙ্গে জানালেন হানান। তিনি বলেন, এই হ্যাকিংয়ের জন্য যাতে তাঁদের কেউ চিহ্নিত করতে না পারে, সে জন্য বার্তা ‘সিন’ করার পর তিনি সেটি ‘মুছে’ দিতে পারেন।
হানান কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট রুটোর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে আরেকজনকে লেখা একটি বার্তা লেখার পর সেটি যথাযথভাবে মুছতে পারেননি। কনসোর্টিয়ামের এক সাংবাদিক পরে ওই বার্তার গ্রহীতাকে খুঁজে বের করে ওই বার্তা দেখতে পান। তার অর্থ দাঁড়াচ্ছে, হানান কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট রুটোর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট যে হ্যাক করেছেন, সেটি সত্যি।
হানান বলেন, বৈশ্বিক টেলিকম সিগনালিং ব্যবস্থা-এসএস৭-এর দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা হ্যাক করেন। জিমেইল সার্ভিস পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। টেলিগ্রাম বলেছে, এসএস-৭-এর দুর্বলতা সম্পর্কে সবাই জানে। ব্যবহারকারী নিরাপত্তাসংক্রান্ত পরামর্শ মেনে না চললে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি তো থেকে যাবে।
হানানের কাজের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে হানান বলেন, কিছু বলার আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু কে সেই কর্তৃপক্ষ, সেটি বলেননি।
হানানের ভাই জোহার বলেন, ‘আমি আমার পুরো জীবন আইন মেনেই কাজ করছি।’
ইসরায়েলের সাবেক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালুর আগেও হানান নিরাপত্তা বিষয়ে কাজ করতেন। ১৯৯৯ সালে তিনি দিমোম্যান ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি কোম্পানি খোলেন। ওই কোম্পানির ঠিকানায় তাঁর ‘মোদি ইন’–এর বাসাকে ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তিনি রপ্তানির লাইসেন্সও নিয়েছিলেন।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমি জানি না, হানান কীভাবে এই অবস্থানে এলেন। তাঁর কোনো গোয়েন্দা অভিজ্ঞতা নেই। তিনি কাজ করেছেন বিমানবাহিনীর একটি অখ্যাত ইউনিটে। তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার জ্যেষ্ঠ ও প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে।
তদন্তের দাবি ভারতীয় কংগ্রেসের
হিন্দুস্তান টাইমস–এর এক খবরে বলা হয়েছে, ভারতের নির্বাচনে টিম জর্জের ভূমিকা নিয়ে বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি তদন্তের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ইসরায়েলি দল টিম জর্জের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ আনা হয়। এতে বলা হয়, তাদের ‘সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া প্রচার’ ভারতের নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে।
কংগ্রেসের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রিনাতে বলেন, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডইন ও জিমেইলের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ভুয়া খবর ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর জন্য ইসরায়েলি দলটি দায়ী। বিজেপির আইটি সেলের কর্মকাণ্ডে ‘টিম জর্জের’ কাজের প্রতিফলন দেখা যায়। তিনি বলেন, এই ভুয়া প্রচার ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সরাসরি প্রভাব ফেলে এবং এর তদন্ত হওয়া উচিত। তিনি দাবি করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মোদির ৬০ ভাগ অনুসরণকারী ভুয়া। টুইটারে ১৮ হাজার অ্যাকাউন্ট থেকে বিজেপির ভুয়া প্রচার চালানো হয়।
বিজেপির পক্ষ থেকে এ নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।