গাজায় ‘সংঘাত বন্ধের’ পরিকল্পনা নিয়ে কী বললেন ট্রাম্প-নেতানিয়াহু
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান সংঘাত নিয়ে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ২০ দফার ‘শান্তি পরিকল্পনা’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে এই আলোচনার বিষয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু।
সোমবার হোয়াইট হাউসে দুজনের বৈঠক হয়। বৈঠকে ট্রাম্প জানান, তাঁর প্রস্তাবিত ‘শান্তি পরিকল্পনায়’ সায় দিয়েছেন নেতানিয়াহু। এ সময় পরিকল্পনার বিভিন্ন দফাগুলো সম্পর্কে কথা বলেন তিনি। তবে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনাটি নিয়ে কী কী বলেছেন ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু—
১. নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের দিনটিকে ‘শান্তির জন্য ঐতিহাসিক একটি দিন’ বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। যদিও যে হামাসকে নির্মূলের জন্য গাজায় অভিযান চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল, তাদের ‘শান্তি পরিকল্পনার’ সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি। ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনায় সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের যুক্ততা রয়েছে।
২. মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গাজায় বন্দী সব জিম্মিকে ইসরায়েলে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে গাজা ‘যুদ্ধ’ বন্ধ হবে। হামাসকে নিরস্ত্র করা হবে। গাজাকে সামরিকীকরণ থেকে মুক্ত করা হবে। তবে ইসরায়েল ‘নিরাপত্তা সীমারেখা’ বজায় রাখবে। গাজা একটি ‘শান্তিপূর্ণ’ বেসামরিক প্রশাসন পাবে।
৩. যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনায় ঐকমত্য হলে গাজায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, হামাসের ‘হুমকি ধ্বংস’ করে দেওয়া হবে। আরব ও মুসলিম দেশগুলো ‘হামাসের সঙ্গে কথা বলবে।’
৪. এই পরিকল্পনায় হামাস এখনো রাজি হয়নি বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। পরিকল্পনাটিকে ‘অত্যন্ত ন্যায্য’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি মেনে নেওয়া এখন হামাসের ওপর নির্ভর করছে। তারা যদি এটি মেনে না নেয়, তাহলে কেবল নিজেদের ওপরই দোষারোপ করতে পারবে।
৫. ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনার তদারকি করবে একটি ‘বোর্ড অব পিস’ বা ‘শান্তি বোর্ড’। এই বোর্ডের নেতৃত্ব দেবেন তিনি নিজেই। ট্রাম্প আরও বলেন, এই বোর্ডে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও থাকতে চান।
৭. সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পর গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা আংশিক প্রত্যাহার করা হবে। পরবর্তী ধাপ হবে হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র করা এবং গাজাকে সামরিকীকরণমুক্ত করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক কমিটি তৈরি করা। ওই কমিটি সফল হলে ইসরায়েল স্থায়ীভাবে ‘যুদ্ধ’ থামাবে।
৮. নেতানিয়াহু বলেন, হামাস যদি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে অথবা প্রথমে মেনে নেওয়ার পর উল্টো পথে হাঁটে, তাহলে ইসরায়েল নিজেরাই ‘কাজটি শেষ করবে’। তিনি বলেন, ‘এটি সহজ উপায়েও হতে পারে, কঠিন উপায়েও হতে পারে। যেভাবেই হোক কাজটি শেষ করা হবে।’