গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে দুই মেরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব বিশ্ব

গতকাল রোববার পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনছবি: রয়টার্স

ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ফিলিস্তিনের গাজায় সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ের লাগাম টানা নিয়ে এখনো বিপরীত মেরুতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব বিশ্ব। গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে আরব দেশগুলো। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে গাজায় আবারও শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত ৩০ দিনে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৯ হাজার ৭৭০ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ফিলিস্তিনিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

গতকাল রোববার পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বৈঠকে গাজায় অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান আব্বাস। তবে মানবিক সহায়তা সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করলেও যুদ্ধবিরতি নিয়ে কিছু বলেননি ব্লিঙ্কেন।

আরও পড়ুন

আগের দিন জর্ডানের রাজধানী আম্মানে আরব নেতা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্লিঙ্কেন। বৈঠকে গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান আরব প্রতিনিধিরা। এ সময় ‘মানবিক বিরতির’ পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কথা তোলেন ধরেন শীর্ষ এই মার্কিন কূটনীতিক। তবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতি হামাসকে পুনর্গঠিত হতে সাহায্য করবে।

এদিকে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকের পর আব্বাসের দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সার্বিক রাজনৈতিক সমঝোতার অংশ হিসেবে গাজার দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। আব্বাস বলেন, গাজা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেম নিয়ে সমন্বিত রাজনৈতিক সমাধান হতে হবে।

এমন সময় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট এ কথা বললেন, যখন যুদ্ধের পর গাজার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ইসরায়েল বলেছে, এ যুদ্ধের পর গাজা পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে তাদের হাতে। আরব নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় ব্লিঙ্কেনও বিষয়টি তোলেন। জবাবে তাঁরা বলেন, আগে যুদ্ধ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। এখন এ নিয়ে কথা বলা অপ্রাসঙ্গিক।

আরও পড়ুন

এক পরিবারের ২১ সদস্য নিহত

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ সত্ত্বেও গাজায় নির্বিচার হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। শনিবার দিবাগত রাতে আল-মাগাজি শরণার্থীশিবিরে হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আগের দিনই অ্যাম্বুলেন্স বহর ও আশ্রয়শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩০ জন প্রাণ হারান।

এদিকে গাজায় পৃথক ইসরায়েলি হামলায় এক পরিবারের ২১ সদস্য নিহত হয়েছেন। গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় অর্ধশতাধিক পরিবারের সব সদস্য নিহত হয়েছেন।

গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৯ হাজার ৭৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের ৪ হাজার ৮০০ জনই শিশু। এ ছাড়া পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ১৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজা ও পশ্চিম তীর মিলে আহত হয়েছেন ২৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।

আরও পড়ুন