ইসরায়েলে বোমার চালান স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলি সেনাদের ট্যাংকবহর রাফা ক্রসিংয়ে প্রবেশ করছে। গতকাল দক্ষিণ গাজায় মিসর সীমান্তের কাছেছবি: এএফপি

গাজার সর্বদক্ষিণের শহর রাফায় ইসরায়েল বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করতে চলেছে—এমন উদ্বেগের জের ধরে গত সপ্তাহে দেশটিতে বোমার একটি চালান স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

জাহাজ মারফত পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা ওই চালানে ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ ২ হাজার পাউন্ড ও ১৭ লাখ ৫০০ পাউন্ড ওজনের বোমা। যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির মিডিয়া পার্টনার সিবিএস নিউজকে এ তথ্য জানান ওই মার্কিন কর্মকর্তা।  

ওই কর্মকর্তা বলেন, রাফায় বেসামরিক লোকজনের মানবিক চাহিদা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ ‘পুরোপুরি বিবেচনায়’ নেয়নি ইসরায়েল।

হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, আলোচনায় আমাদের উদ্বেগকে পুরোপুরি বিবেচনায় আনা হয়নি। রাফায় বড় ধরনের স্থল অভিযান চালানোর ব্যাপারে ইসরায়েলি নেতাদের সিদ্ধান্তমূলক অবস্থানের দৃশ্যত ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। ফলে ইসরায়েলে প্রস্তাবিত অস্ত্রের চালান পাঠানোর বিষয়টি যত্নের সঙ্গে পুনর্বিবেচনা শুরু করি আমরা।

এ বিষয়ে ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

হোয়াইট হাউস প্রশাসনের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান, রাফায় ইসরায়েলের বড় রকমের স্থল অভিযান চালানো উচিত হবে না। কেননা, সেখানে ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাঁদের অন্যত্র যাওয়ার জায়গা নেই।’

রাফায় বেসামরিক মানুষের মানবিক চাহিদা ইসরায়েল কীভাবে মেটাবে ও সেখানে হামাসের বিরুদ্ধে আলাদা অভিযান পরিচালনা করবে, সেসব বিষয়ে স্ট্র্যাটেজিক কনসালটেটিভ গ্রুপের কাঠামোয় দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা চলছে বলে এই কর্মকর্তা জানান।

হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আলোচনা এখনো চলছে এবং আমাদের উদ্বেগকে পুরোপুরি বিবেচনায় আনা হয়নি। রাফায় বড় ধরনের স্থল অভিযান চালানোর ব্যাপারে ইসরায়েলি নেতাদের সিদ্ধান্তমূলক অবস্থানের দৃশ্যত ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। ফলে ইসরায়েলে প্রস্তাবিত অস্ত্রের চালান পাঠানোর বিষয়টি যত্নের সঙ্গে পুনর্বিবেচনা শুরু করি আমরা। এসব অস্ত্র হয়তো রাফা ব্যবহার করা হতো।’

আরও পড়ুন

প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার ফলাফল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে ইসরায়েলে বোমার একটি চালান স্থগিত করেছে এবং চালানটির বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেও জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা।

ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলার কারণে গাজার উত্তর ও মধ্যাঞ্চল থেকে পালিয়ে ১০ লাখের মতো ফিলিস্তিনি রাফায় আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তাঁবু টানিয়ে গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন তাঁরা। শহরটির পূর্বাঞ্চল থেকে এক লাখ ফিলিস্তিনিকে খান ইউনিসে তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার এক দিন পরই গত সোমবার রাফায় অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। প্রাণ বাঁচাতে এখান থেকেও পালানো শুরু করেছেন ফিলিস্তিনিরা।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় নারকীয় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তাদের নির্বিচার হামলায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৭৮০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অগণিত।

আরও পড়ুন