পাকিস্তানের যে এলাকা ১০ ফুট পানির নিচে

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের দাদু জেলার খায়েরপুর নাথান শাহ শহর ১০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে
ছবি: এএফপি

ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির সিন্ধু প্রদেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সিন্ধু নদীর ভাটিতে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় দাদু জেলা প্লাবিত হয়েছে। ওই জেলার কিছু এলাকা ১০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। খবর ডনের।

পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী শেরি রহমান এক সম্মেলনে বলেছেন, বন্যায় দেশটি ৪৫ শতাংশ ফসলি জমি ভেসে গেছে। বিশেষ করে সিন্ধু প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারা দেশে প্রায় ১০০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

শেরি রহমান আরও জানান, দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ জেলা এখন পানির নিচে। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের এক–তৃতীয়াংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে, যা আয়তনের প্রায় যুক্তরাজ্যের সমান।

দাপ্তরিক তথ্য অনুযায়ী, বন্যাকবলিত জেলার সংখ্যা ১১০টিতে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বেলুচিস্তানের ১১০টি, খাইবার পাখতুনখাওয়ার ৩৩টি, সিন্ধু প্রদেশের ১৬টি আর বাকিগুলো পাঞ্জাব, গিলগিট–বালতিস্তান ও আজাদ কাশ্মীরের।

১০ ফুট পানির নিচে

সিন্ধু প্রদেশের দাদু জেলা ভয়াবহ প্লাবনের কবলে পড়েছে। খায়েরপুর নাথান শাহ শহর তলিয়ে গেছে। জোহি ও মেহার এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের শহরগুলো রক্ষায় সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ছে। পানির স্তর বাড়তে থাকায় জোহির ৫০ হাজার বাসিন্দা আর অন্যান্য বন্যাকবলিত গ্রাম থেকে আশ্রয়ের খোঁজে আসা ১০ হাজার মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

খায়েরপুর নাথান শাহে বন্যার পানির স্তর বেড়ে ১০ ফুটে গিয়ে ঠেকেছে। হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। লোকজন খাবারের সন্ধানে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ছুটছেন বলে জানান স্থানীয় নাগরিক কমিটির সভাপতি হাফিজ আমিন জামালি।

আরও পড়ুন

সিন্ধু মহাসড়ক তলিয়ে যাওয়ায় অন্যান্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মেহার। শহর রক্ষায় বাঁধের উচ্চতা বাড়িয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। পরিবার নিয়ে বন্যাকবলিত এলাকাতেই থাকার কথা জানিয়ে ২০ বছর বয়সী দামশাদ আলি বলেন, ‘আমরা সকাল থেকেই এই বাঁধ তৈরি এবং শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছি।’ দাদু শহরও চারদিক থেকে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

ভয়াবহ বন্যায় সিন্ধু প্রদেশের দাদু জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
ছবি: এএফপি

এদিকে ভয়াবহ এই বন্যায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত বেড়ে ১ হাজার ১৯১ জনে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের ৩৯৯ জনই শিশু। চলতি মাসে আরও বৃষ্টির পাশাপাশি বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

উদ্ধার অভিযান শুরুর পর সামরিক বাহিনী ৫০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে এনেছে। প্রায় এক হাজার জনকে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুন