ইকুয়েডরে আবারও সন্দেহভাজন গ্যাংগুলোর মধ্যে সহিংসতা, নিহত ৮

ইকুয়েডরে কোকেন পাচারকারী প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংগুলোর মধ্যে সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে। সম্প্রতি এমনই একটি সহিংসতার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করছে
ছবি: এএফপি ফাইল ছবি

ইকুয়েডরের একটি নাইটক্লাবের সামনে গতকাল রোববার এক সহিংসতার ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচজন। মাদক পাচারকারী প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংগুলোর মধ্যে এ সহিংসতা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ নিয়ে চলতি মাসে ইকুয়েডরে এ ধরনের তৃতীয় সহিংসতার ঘটনা এটি।

হোয়াটস অ্যাপ চ্যাট গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে পাঠানো বার্তায় ইকুয়েডর পুলিশ বলেছে, লা কনকর্ডিয়া শহরের একটি নাইটক্লাবের সামনে এ সহিংসতা হয়েছে।

ইকুয়েডরে মাদক চোরাচালানের পথগুলোতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কোকেন পাচারকারী প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংগুলোর মধ্যে সহিংসতার মাত্রা বেড়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে  সড়কে ও কারাগারে বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন। কাউকে শিরশ্ছেদ করা হয়েছে আবার কাউকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, গতকাল আরও কয়েকটি হামলায় ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটোতে চারজন নিহত হয়েছেন।

এর আগে গত সোমবার গুয়াইয়াকিলে গ্যাংগুলোর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ছয়জন নিহত এবং আটজন আহত হয়। বন্দর শহর গুয়াইয়াকিলে সবচেয়ে বেশি মাদকসংক্রান্ত সহিংসতা হয়ে থাকে।

গুয়াইয়াকিল হলো ইকুয়েডরের সবচেয়ে বড় শহর ও বড় বন্দর। এটি দেশটির অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্রও। ইকুয়েডরের ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের মধ্যে ৩০ লাখেরই বসবাস এ শহরে। অবস্থানগত কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে মাদক চোরাচালানের ক্ষেত্রে গুয়াইয়াকিলকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়।

আরও পড়ুন

৪ জুন গুয়াইয়াকিল শহরের একটি বাড়িতে হামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন নিহত হন।

কলম্বিয়া ও পেরুর মাঝখানে ইকুয়েডরের অবস্থান। এটি বিশ্বের শীর্ষ কোকেন উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত।

চলতি বছর এ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অভিযানে ১০০ টন মাদক জব্দ করেছে। ২০২১ সালে রেকর্ড ২১০ টন মাদক জব্দ করা হয়েছিল। আর ২০২২ সালে জব্দ হয়েছে ২০০ টন মাদক।

ইকুয়েডরের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দেশটির অধিবাসীদের লাখে ১৪ থেকে ২৫ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ইকুয়েডর সীমান্তের মধ্যে ১২টির বেশি অপরাধী সংগঠন সক্রিয় রয়েছে। এর কোনো কোনোটির সদস্য সংখ্যা কয়েক হাজার। কিছু সংগঠনের সঙ্গে মেক্সিকোর সিনালোয়া কার্টেন এবং জালিসকো নিউ জেনারেশন কার্টেল নামের সংগঠনের সম্পৃক্ততা আছে বলে সন্দেহ করা হয়।

২০২১ সালে ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গিলেরমো লাসসো কয়েকবারই জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। অপরাধের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় কারফিউও জারি করেন তিনি।

গত এপ্রিলে ইকুয়েডর সরকার সংগঠিত অপরাধী সংগঠনগুলোকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়।