গোপনে দেশ ছাড়লেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা লোপেজ

লিওপোল্ডো লোপেজ
ছবি: রয়টার্স

ভেনেজুয়েলার শীর্ষস্থানীয় বিরোধী নেতা লিওপোল্ডো লোপেজ গোপনে দেশ ছেড়েছেন। তাঁর পরিবার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। গতকাল শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানায়।

প্রায় দেড় বছর ধরে লোপেজ ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে স্পেনের দূতাবাসে আশ্রয় নিয়ে অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে তিনি কলম্বিয়ায় গেছেন বলে তাঁর পরিবার জানায়। পরে তাঁর স্পেনে যাওয়ার কথা।

দেশ ছাড়ার পর লোপেজ নিজেও অবশ্য একটি টুইট করেছেন। তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘ভেনেজুয়েলাবাসী, এই সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না। তবে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন, এই সেবক যেকোনো স্থান থেকে লড়াই করবে।

ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা জুয়ান গুয়াইদোর সঙ্গে উপস্থিত হওয়ার পাশাপাশি দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে হঠাতে বিদ্রোহের ডাক দিয়েছিলেন লোপেজ। তারপরই তিনি স্পেন দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

সহিংস রাজনৈতিক বিক্ষোভ প্ররোচিত করার অভিযোগে ২০১৪ সালে লোপেজ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। লোপেজ বারবার ওই অভিযোগ অস্বীকার করলেও তাঁকে সামরিক কারাগারে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

২০১৭ সালে লোপেজকে গৃহবন্দী করা হয়। বিরোধী দলের সমর্থনপুষ্ট নিরাপত্তা এজেন্টেরা গত বছর তাঁকে মুক্ত করলেও তিনি গৃহবন্দী ছিলেন।

পরে ভেনেজুয়েলার একটি আদালত লোপেজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালত বলেন, তিনি গৃহবন্দীর শর্ত লঙ্ঘন করেছেন। তাঁকে ১৪ বছর কারাদণ্ডের বাকি সময় জেলে কাটাতে হবে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লোপেজ ভেনেজুয়েলার রাজধানীতে অবস্থিত স্প্যানিশ রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে আশ্রয় চান। ২০১৯ সালের এপ্রিলে স্পেন দূতাবাসে আশ্রয় নেন তিনি।

গতকাল শনিবার লোপেজের বাবা জানান, তাঁর ছেলে দুদিন আগে দূতাবাস ছেড়েছেন। গত শুক্রবার তিনি কলম্বিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করেন। সেখান থেকে তাঁর স্পেনে যাওয়ার কথা। স্পেনের মাদ্রিদে স্ত্রী ও তিন সন্তানের সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা রয়েছে।

লোপেজের দেশ ছাড়ার বিষয়ে মাদুরোর সরকার কোনো মন্তব্য করেনি।

ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা হুয়ান গুয়াদোও এই বার্তাকে স্বাগত জানিয়ে টুইট করেছেন। টুইটে তিনি বলেছেন, ‘মাদুরো, কোনো কিছু তোমার নিয়ন্ত্রণে নেই।’

লোপেজের দেশ ছাড়ার খবরকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কলম্বিয়ায় অবস্থিত ভেনেজুয়েলার জন্য ভার্চ্যুয়াল মার্কিন দূতাবাস এক টুইটে বলেছে, ‘লোপেজকে মুক্ত দেখে আমরা খুশি। মাদুরোর সঙ্গে একমত না হওয়ায় দেশটির অবৈধ সরকার শত শত মানুষকে বন্দী করে রেখেছে। তারা সরকারের জন্য হুমকি। কারণ, তাঁদের সঙ্গে জনগণ আছে। এ ছাড়া সাংবিধানিক অধিকার চাওয়ার মতো সাহস তাঁদের আছে।’

ভেনেজুয়েলায় কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে।

দেশটিতে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। এর প্রতিবাদে গত মাসেও দেশজুড়ে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়।