ব্রাজিলে টিকা পরীক্ষার সময় একজনের মৃত্যু

ব্রাজিলে টিকা নিয়ে গবেষণা চলছে
ছবি : রয়টার্স

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে নাম লেখানো একজন স্বেচ্ছাসেবী মারা গেছেন। তবে এটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে ওই স্বেচ্ছাসেবী ভ্যাকসিন নেওয়ার আগেই মারা গেছেন, নাকি ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তির বাড়ি ব্রাজিলের কোথায়, তা-ও জানা যায়নি।

এদিকে এ মৃত্যুর ঘটনা পর্যালোচনার পরও অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকাটির পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ গোপনীয়তা প্রোটোকলের উদ্ধৃতি দিয়ে মৃত্যুর বিষয়ে কোনো বিবরণ দেয়নি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বেচ্ছাসেবকের মৃত্যুর ঘটনায় নিবিড় পর্যবেক্ষণে টিকা নিয়ে কোনো নিরাপত্তা উদ্বেগ দেখা যায়নি। তবে বিবিসি বলছে, ব্রাজিলের যে স্বেচ্ছাসেবক মারা গেছেন, তাঁকে কোনো টিকা দেওয়া হয়নি।

কোভিড-১৯ টিকা পরীক্ষার ক্ষেত্রে অর্ধেক স্বেচ্ছাসেবক প্রকৃত অক্সফোর্ডের টিকাটি পেয়েছেন। বাকি অর্ধেককে লাইসেন্স করা মেনিনজাইটিভ টিকা দেওয়া হয়। স্বেচ্ছাসেবক বা তাঁর পরিবারের কেউই টিকা-সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারেন না। এতে গবেষকেরা দুই গ্রুপের মধ্যে ফলাফল তুলনা করে টিকার কার্যকারিতা বুঝতে পারেন।

ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার বিষয়ে তারা মন্তব্য করবে না। তবে তারা সব ধরনের পর্যালোচনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গবেষকেরা আশা করছেন, অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি সবার আগে বাজারে আসবে।
টিকাটি ইতিমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় সফল হয়েছে। যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল ও ভারতে টিকাটির তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চলছে।

গত মাসে যুক্তরাজ্যে এক স্বেচ্ছাসেবকের ক্ষেত্রে টিকাটি নেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়। কয়েক দিন পরই আবার পর্যালোচনায় টিকাটি নিরাপদ বলে দাবি করেন গবেষকেরা। এরপর আবার পরীক্ষা চালু হয়। তার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে টিকাটির পরীক্ষা বন্ধ রেখেছেন দেশটির নিয়ন্ত্রকেরা। ব্লুমবার্গকে যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অবশ্য শিগগিরই টিকাটির পরীক্ষা চালু করার কথা বলেছেন।

ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ১৯ অক্টোবর তারা একজন স্বেচ্ছাসেবকের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারে।

ব্রাজিলের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মারা যাওয়া ব্যক্তির বয়স ২৮ বছর। তিনি একজন চিকিৎসক। তিনি কোভিড-১৯ জটিলতায় ভুগছিলেন। ওই স্বেচ্ছাসেবক সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসা দিতেন। অবশ্য গণমাধ্যমের খবরের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি ব্রাজিল স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ আনভিসা।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকাটি কার্যকর প্রমাণিত হলে তা কেনার পরিকল্পনা রয়েছে ব্রাজিলের।
জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ব্রাজিলে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৫২ লাখ ৯৮ হাজার ৭৭২ জনের। বিশ্বে করোনা সংক্রমণের হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের পরই অবস্থান দেশটির। ব্রাজিলের করোনা সংক্রমণে মারা গেছেন এক লাখ ৫৫ হাজার ৪০৩ জন।

আরও পড়ুন