যুক্তরাষ্ট্রে ৪ কিশোর–কিশোরীর ৩ জনই স্মার্টফোন ছাড়া শান্তিতে থাকে

অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওপর ডিজিটাল মাধ্যমের প্রভাব নিয়ে অনেকের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছেপ্রতীকী ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের কিশোর–কিশোরীদের বেশির ভাগ বলছে, যখন তাদের হাতে স্মার্টফোন থাকে না, সে সময় তারা বেশ খুশি থাকে। তাদের জীবন থাকে শান্তিপূর্ণ। গতকাল সোমবার প্রকাশিত পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপের ফলাফল থেকে একথা জানা গেছে।

জরিপে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চারজন কিশোরে–কিশোরীর তিনজনই বলছেন, স্মার্টফোন ছাড়া কাটানো সময়টা সুখে কাটায় তারা। এর মধ্য দিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্কদের ওপর ডিজিটাল মাধ্যমের প্রভাব নিয়ে বিদ্যমান উদ্বেগের বিষয়টি উঠে এসেছে।

বেশির ভাগ কিশোর–কিশোরী স্মার্টফোনের কারণে অশান্তির কথা জানালেও তাদের মাত্র ৩৬ শতাংশ সেসব ডিভাইসের ব্যবহার বন্ধ করেছেন, এমনটা জানিয়েছে পিউ রিসার্চ।

আরও পড়ুন

জরিপে বলা হয়েছে, ৩৮ শতাংশ কিশোর–কিশোরী মনে করে, তারা স্মার্টফোনে ‘অনেক বেশি’ সময় কাটায়। যদিও ৫১ শতাংশের মতে, এমন অত্যধিক সময় কাটানোটা ‘সঠিক’। কিশোরদের তুলনায় কিশোরীরা স্মার্টফোনে বেশি সময় কাটায় বলে জরিপে জানা গেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিষয়ে মতামত অনেকটা একই। ৩৯ শতাংশ কিশোর–কিশোরী ব্যবহার কমিয়ে এনেছে বলে জানিয়েছে। আর ২৭ শতাংশ মনে করছে, তারা বেশি সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাটাচ্ছে।

অন্যদিকে সামাজিক দক্ষতা শেখার বিষয়ে জানতে চাইলে, ৪২ শতাংশ কিশোর–কিশোরী জানিয়েছে, স্মার্টফোন সেটা শেখার কৌশল কঠিন করে ফেলেছে। আর ৩০ শতাংশ বলছে, এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোন বেশ উপকারী।

আরও পড়ুন

হাতের নাগালে স্মার্টফোন না থাকলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কিশোর–কিশোরী ‘নেতিবাচক অনুভূতি’ বোধ করে। জরিপে দেখা গেছে, কিশোর–কিশোরীদের ১০ জনের মধ্যে ৪ জন স্মার্টফোন ছাড়া উদ্বিগ্ন হয়। তাদের মন খারাপ হয়, একাকী বোধ করে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশের আইনপ্রণেতারা অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ধরে চাপ প্রয়োগ করছে। এর মধ্যেই জরিপের এসব ফলাফল জানা গেল।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ৪০টির বেশি অঙ্গরাজ্য ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরুর কথা জানায়। তাদের অভিযোগ, এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতি শিশুরা ক্রমেই আসক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

আরও পড়ুন

গত জানুয়ারিতে মার্কিন সিনেটের শুনানিতে অংশ নেন মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। এর আগে তিনি ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চান।

টেক্সাস, ফ্লোরিডাসহ যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্য, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) শিশুদের অনলাইনে ক্ষতিকারক বিষয়বস্তুর প্রসার কমিয়ে আনতে আইন করেছে।

গত মাসে শেষ রাষ্ট্র হিসেবে কানাডা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আরও বড় পরিসরে আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে অনলাইনের ক্ষতিকর কনটেন্টগুলো থেকে শিশুরা সুরক্ষিত থাকবে। এসবের নিয়ন্ত্রণ থাকবে মা–বাবার হাতে। এমনকি অনলাইনে অনুসন্ধানের ব্যবস্থাও নিরাপদ হবে।

আরও পড়ুন