ইরানে ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় বাইডেন প্রশাসনের মুখে কুলুপ
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা বলেছেন, শুক্রবার ভোরে ইরানে ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় তাঁদের প্রকাশ্যে মন্তব্য না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে যেন সহিংসতা ছড়িয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে বিভিন্ন দেশ। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদেরও চুপ থাকার খবরটিও সামনে এল।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কর্মকর্তা, প্রতিরক্ষা দপ্তর, পররাষ্ট্র দপ্তর এবং অন্য সংস্থার কর্মকর্তারা এ অভিযান নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ বলেছেন, এ প্রসঙ্গে কথা না বলার জন্য সরকারিভাবে নির্দেশ পেয়েছেন তাঁরা।
এ মার্কিন কর্মকর্তারা আশা করছেন, ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ হামলা-পাল্টা হামলার চক্রটি গত শুক্রবারের ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। তাতে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এ হামলার বদলা হিসেবে গত ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরক ড্রোন, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। তবে ইসরায়েলি ও মার্কিন বাহিনী এর বেশির ভাগই প্রতিহত করেছে। সবশেষ গতকাল শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ইরানের ইস্পাহান শহরে হামলা হয়।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, ইরানে ইসরায়েলি অভিযানের একেবারে আগ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে জানতে পেরেছিল। তবে সে অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়নি। ইতালিতে আলাদা এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনিও ব্লিঙ্কেনও বলেছেন, কোনো ধরনের আক্রমণাত্মক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত নয়। এর বাইরে তিনি আর কিছু বলতে চান না।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা নিয়ে শুধু নির্বাচিত তথ্যগুলোই প্রকাশ করে ওয়াশিংটন। অথচ ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর ওপর এবং ইয়েমেনে বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজে ইরান সমর্থিতদের হামলার খবরগুলো বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে আগ্রাসী হামলায় ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা করা নিয়ে যে খোদ ডেমোক্র্যাট দলীয় সদস্যদের কেউ কেউ যে হতাশা প্রকাশ করেন—সেটি নিয়ে মার্কিন প্রশাসন আবার খুব একটা তথ্য প্রকাশ করে না।