বিতর্কের সঞ্চালকেরা কমলার পক্ষে কাজ করেছেন, অভিযোগ ট্রাম্প শিবিরের

ফিলাডেলফিয়ায় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৯টায় নির্বাচনী বিতর্কে মুখোমুখি হন কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মুখোমুখি বিতর্কে সঞ্চালকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রিপাবলিকান শিবির। ট্রাম্পের প্রচারশিবিরের প্রতিনিধিরা বলছেন, ট্রাম্পকে ঘায়েল করতে কমলা ও সঞ্চালকেরা একজোট হয়ে কাজ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়ায় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার সকাল ৭টা) নির্বাচনী বিতর্কে কমলা ও ট্রাম্প মুখোমুখি হন। ন্যাশনাল কনস্টিটিউশন সেন্টারে ৯০ মিনিটের এ বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজক মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি নিউজ। সঞ্চালক ছিলেন ডেভিড মুইর ও লিনসে ডেভিস।

গতকালের বিতর্কে অর্থনীতি, অভিবাসন, গর্ভপাতসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। এসব বিষয়ে কমলা ও ট্রাম্প পরস্পরকে আক্রমণ করেন। এমনকি পরস্পরের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার অভিযোগও তোলেন তাঁরা। একজন আরেকজনকে বলেন মিথ্যাবাদীও।

রিপাবলিকান সিনেটর টম কটনের অভিযোগ, বিতর্ক অনুষ্ঠানের সঞ্চালকেরা ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গে মিলে ট্রাম্পের বিপক্ষে ভূমিকা পালন করেছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এটি ছিল তিনজনের বিরুদ্ধে একজনের’ বিতর্কের লড়াই।

টম কটন আরও বলেন, ‘তাঁর (কমলার) কোনো কিছু করারই পরিকল্পনা নেই। সাত, আট কিংবা নয় মাসের মধ্যে গর্ভপাতের বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত কি না, সে প্রশ্নে কোনো অবস্থান নিতে তিনি (কমলা) অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এর কারণ, তিনি কট্টর বামপন্থী অবস্থান পোষণ করেন।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে এই প্রথম কমলা ও ট্রাম্প মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিলেন। ট্রাম্প অবশ্য আগে একবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন।

বিতর্ক অনুষ্ঠানের সঞ্চালকেরা ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গে মিলে ট্রাম্পের বিপক্ষে ভূমিকা পালন করেছেন। এটি ছিল তিনজনের বিরুদ্ধে একজনের বিতর্কের লড়াই।
টম কটন, রিপাবলিকান সিনেটর

দেড় ঘণ্টার বিতর্কে কমলা ও ট্রাম্প—দুজনই কথার লড়াইয়ে মেতে ওঠেন। যুক্তি উপস্থাপন, পাল্টাপাল্টি আক্রমণে একে অপরকে নাস্তানাবুদ করার চেষ্টা করেন। বিতর্কে অর্থনীতি, অভিবাসন, গর্ভপাতসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। এসব বিষয়ে কমলা ও ট্রাম্প পরস্পরকে আক্রমণ করা ছাড়াও একে অপরের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার অভিযোগ তোলেন। বলেন একজন আরেকজনকে মিথ্যাবাদীও।

আরও পড়ুন

আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে লড়তে চেয়েছিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ৮১ বছর বয়সী বাইডেন গত ২৭ জুন রাতে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নেন।

বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে ধরাশায়ী হন বাইডেন। এতে তাঁর নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়ার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য চাপ বাড়লে গত ২১ জুলাই প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি। একই সঙ্গে দলের নতুন প্রার্থী হিসেবে তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের প্রতি সমর্থন জানান।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে এই প্রথম কমলা ও ট্রাম্প মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিলেন। ট্রাম্প অবশ্য আগে একবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন।

গত ১৮ জুলাই মিলওয়াউকিতে রিপাবলিকান পার্টির সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন গ্রহণ করেন ট্রাম্প। আর ২২ আগস্ট শিকাগোয় ডেমোক্রেটিক পার্টির চার দিনের জাতীয় সম্মেলনের শেষ দিনে কমলা আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় মনোনয়ন গ্রহণ করেন।

আরও পড়ুন