কেনটাকিতে ভয়াবহ বন্যায় মৃত ১৬

মুষলধারে বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকিতে নজিরবিহীন বন্যায় স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার নাগাদ কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানায়, মুষলধারে বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ঘরবাড়ি ভেসে গেছে, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। নদীগুলোর পানি দুকূল উপচে পড়ে। নিহত মানুষের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।

পার্শ্ববর্তী অঙ্গরাজ্যের নিরাপত্তাকর্মীসহ পুলিশ, ন্যাশনাল গার্ডের সেনারা হেলিকপ্টার ও নৌকা ব্যবহার করে ঘরবাড়ি ও গাড়িতে আটকে পড়া অনেক লোকজনকে উদ্ধার করেন। কেনটাকির অ্যাপালাচিয়ান কয়লাখনি অঞ্চলে লোকজন বন্যার পানিতে আটকে পড়েন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বন্যার পানি বাসাবাড়ির ছাদ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। সড়কগুলো নদীর মতো দেখাচ্ছে। এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার বলেন, ‘এখানেই শেষ নয়; যখন আমরা যেখানে তল্লাশি ও উদ্ধারকাজ চালাতে যাচ্ছি, সেখানে এখনো বাস্তবে বিপজ্জনক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন
হেলিকপ্টার ও নৌকা ব্যবহার করে ঘরবাড়ি ও গাড়িতে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করা হয়
ছবি: রয়টার্স

অ্যান্ডি বেশিয়ার বলেন, সবচেয়ে বন্যাকবলিত এলাকাগুলো হেলিকপ্টারে পরিদর্শনের সময় বন্যার বিস্তৃতি দেখে হতবাক হয়ে যান ইউএস ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রধান ডিন ক্রিসওয়েল।

অ্যান্ডি বেশিয়ার বলেন, অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ফ্রাঙ্কফোর্টের ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের শহর জ্যাকসনের অধিকাংশই পানির নিচে। এই শহরে ২ হাজার ২০০ মানুষের বসবাস।

গভর্নর বেশিয়ার বলেন, ‘শত শত ঘরবাড়ি, খেলার মাঠ, পার্ক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এত বেশি পানির নিচে, যা আমাদের কেউ কেউ এই অঞ্চলে এবারই প্রথম দেখেছে।’ তিনি বলেন, এককথায় ধ্বংসাত্মক।

অ্যান্ডি বেশিয়ার জানান, গতকাল বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের, তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৬টি শিশু রয়েছে। এই সংখ্যা নিশ্চিতভাবে বাড়বে, যখন বন্যার পানি নেমে যাবে এবং উদ্ধারকারী দলগুলো আরও মরদেহ উদ্ধার করবে। তিনি বলেন, অনেক মানুষ হিসাবের বাইরে রয়ে গেছে।

পরিবেশবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও কেনটাকি জিওলজিক্যাল সার্ভের পরিচালক উইলিয়াম হ্যানবার্গ বলেন, এই অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ ইঞ্চি (১৩-২৫ সেন্টিমিটার) বৃষ্টিতে এই বন্যার সৃষ্টি হয়। এই অঞ্চলের রেকর্ড বইয়ে এ ধরনের প্লাবন নজিরবিহীন মনে করা হচ্ছে।

ভয়াবহ এই বন্যা সাত মাসের মধ্যে কেনটাকিতে দ্বিতীয় কোনো বড় ধরনের জাতীয় দুর্যোগ। গত ডিসেম্বরে বেশ কিছু টর্নেডোর আঘাতে এই অঙ্গরাজ্যের পশ্চিম অংশে প্রায় ৮০ জনের মৃত্যু হয়।