ফেসবুকে একের পর এক বার্তায় হামলার পরিকল্পনা জানান বন্দুকধারী

বন্দুক হামলায় নিহত শিক্ষার্থীদের স্বজনদের আহাজারি
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি স্কুলে ঢুকে গুলি করে ১৯ শিক্ষার্থী ও তাদের দুই শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় জড়িত বন্দুকধারী হামলা করার আগে ফেসবুকে তাঁর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট যুক্তরাষ্ট্র সময় বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। খবর গার্ডিয়ান অনলাইনের।

গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট বলেন, রব এলিমেন্টারি স্কুলে প্রাণঘাতী এ হামলা করার আগে বন্দুকধারী সালভাদর রামোস তিনবার এ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন।

অ্যাবোট এসবকে পোস্ট বললেও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে বলেছে, বন্দুকধারী একজনের সঙ্গে এমন বার্তা আদান-প্রদান করেন। ফলে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটার আগে বিষয়টি তারা জানতে পারেনি। ফেসবুকের মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চলমান তদন্তে আমরা ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করছি।’

বন্দুকধারী সালভাদর রামোস স্কুলে ঢোকার ৩০ মিনিট পূর্বে প্রথম বার্তাটি পাঠান। সেখানে তিনি তাঁর দাদিকে গুলি করে হত্যা করার কথা বলেন। দ্বিতীয় বার্তায় বলেন, ‘আমি আমার দাদিকে গুলি করেছি।’ তৃতীয় বার্তাটি পাঠান হামলার আনুমানিক ১৫ মিনিট পূর্বে। তাতে বন্দুকধারী জানান, ‘আমি একটি এলিমেন্টারি স্কুলে গুলি করতে যাচ্ছি।’ কর্মকর্তারা বলছেন, হামলার কথা বললেও কোন স্কুলে হামলা চালাতে যাচ্ছেন, তা বলেননি এবং কাকে বার্তাটি পাঠিয়েছিলেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

টেক্সাসের গভর্নর সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, বন্দুকধারী সালভাদর রামোসের বয়স ১৮ বছর বলে জানা গেছে। ইউভালডে শহরের স্কুলে হামলায় সালভাদর এআর-১৫ বন্দুক ব্যবহার করেন। মেক্সিকো সীমান্ত থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার ও সান আন্তোনিও থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দূরের কৃষিক্ষেত্রে প্রায় ১৬ হাজার বাসিন্দার একটি শহর ইউভালডে। বাসিন্দারা প্রধানত লাতিন। অ্যাবট আরও জানিয়েছেন, বন্দুকধারীর দাদি তাঁকে গুলি করার আগে পুলিশকে ফোন করেছিলেন।

প্রায় এক দশকের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্কুলে এটাই সবচেয়ে প্রাণঘাতী বন্দুক হামলা। কর্তৃপক্ষ বলছে, চতুর্থ গ্রেডের শ্রেণিকক্ষে ঢুকে বাচ্চাদের আটকে রেখে গুলি করেন বন্দুকধারী। অ্যাবট জানান, উচ্চবিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া রামোস ইউভালডেতে থাকতেন। তাঁর নামে কোনো মামলা বা মানসিক সমস্যা ছিল না।

হোয়াইট হাউস থেকে আবেগঘন বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘অনেক মা-বাবা আর তাঁদের সন্তানকে দেখতে পাবেন না। নিহত শিশুরাও তাদের মা-বাবাকে জড়িয়ে ধরবে না। সন্তান হারানো এই মা-বাবারা আর আগের মতো থাকবেন না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরেকটি বেপরোয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া ফুটফুটে, সুন্দর সব শিশু মারা গেল। এসব ঘটনায় আমি ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’