বাচ্চু ভাই আমার শিক্ষক: পার্থ বড়ুয়া

আইয়ুব বাচ্চু ও পার্থ বড়ুয়া। ছবি: সংগৃহীত
আইয়ুব বাচ্চু ও পার্থ বড়ুয়া। ছবি: সংগৃহীত

দেশের গানের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর আচমকা মৃত্যুতে কাঁদছে অগণন ভক্ত। দেশে ও দেশের বাইরের ভক্ত-শ্রোতাদের চোখের জলে ভাসাচ্ছে প্রতিনিয়ত। সংগীতাঙ্গনে তাঁর দীর্ঘদিনের সহযাত্রীরাও কাঁদছে। কেউ তো আবার অভিভাবক এবং শিক্ষককে হারিয়েছেন। আইয়ুব বাচ্চুর অনুজপ্রতিম সোলস ব্যান্ডের জনপ্রিয় গায়ক পার্থ বড়ুয়া বলেন, ‘আমাকে হাতে ধরে গিটার শিখিয়েছেন বাচ্চু ভাই, ওয়ান টু ওয়ান যেটা বলে। তারপর অনেকদিন তাঁর সঙ্গে কিবোর্ড বাজিয়েছি। তিনিই আমাকে ঢাকায় নিয়ে এসেছে। আমার পেশাদার গানের জীবনের শুরুটাও তাঁর হাত ধরে।’

চার দশকেরও বেশি সময় ধরে গানের জগতে আছে ব্যান্ড সোলস। এর মধ্যে ২০০০ সালের পর চার বছরের মতো গানের জগৎ থেকে দূরে সরে ছিল দলটি। আইয়ুব বাচ্চুই নাকি আবার বলে কয়ে সোলসকে গানের জগতে ফেরান।

পার্থ বড়ুয়া বলেন, ‘সোলসের কার্যক্রম ২০০৩ সাল থেকে বন্ধ ছিল। এরপর বাচ্চু ভাইয়ের কারণে আবার শুরু করছি। তিনি সাহস দিয়েছিলেন। বলছিলেন, পারবি। চেষ্টা কর। আমরা এক পর্যায়ে পাঁচ-ছয় মাস মহড়া করলাম। আবার গানের মঞ্চে ফিরলাম। বাচ্চু ভাইয়ের সঙ্গেই মেডিকেল কলেজের একটা শো করেছিলাম। যদি আমরা কোনো ধরনের সম্মানী ছাড়াই অনুষ্ঠানটি করি তারপরও বাচ্চু ভাই আমাদেরকে তখন ৩০ হাজার টাকা সম্মানী দেন। বলছিলেন, এটা রাখ তোরা। জোর করেই দিয়েছিলেন। শুধু তাই, তার আগেই আমাদের মঞ্চে তোলেন। আমরা সেদিন ৩০ মিনিট পারফর্ম করি।’

আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে শোটি করার পর থেকে সোলসের ব্যস্ততা আবার বাড়তে থাকে। একের পর এক শো করতে থাকেন দেশে ও দেশের বাইরে। পার্থ বড়ুয়ার মতে, ‘মঞ্চে সেদিনের শোর পর থেকেই সোলস আবার ঘুরতের শুরু করল। এরপর আর থামেনি, এখনো চলছে। তিনি আমাদের উৎসাহ, অনুপ্রেরণা ও জোর করে ফেরান।’

চট্টগ্রাম থেকে পার্থ বড়ুয়াকে ঢাকায় আনার পর আইয়ুব বাচ্চু নিজের সঙ্গে কাজে যুক্ত করেন। অনেক কিছুই পার্থ বড়ুয়াকে হাতে ধরে শিখিয়েছেন। পার্থ বড়ুয়ার মতে, ‘জীবনে যা কিছু শিখেছি বা যা কিছুই হতে পেরেছি তার সবই বাচ্চু ভাইয়ের কাছ থেকেই। এত তাড়াতাড়ি তিনি চলে যাবেন, এটা কল্পনারও বাইরে। এই সময়টায় না গেলেই কি হতো না। খুব তাড়াতাড়িই চলে গেলেন বাচ্চু ভাই।’