টাঙ্গাইলের সখীপুরে একটি মাদ্রাসার অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রের ২৮টি সংস্করণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের দাওয়াত পাওয়া ২৮ জন অতিথিকে ২৮ ধরনের আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়। প্রতিটি আমন্ত্রণপত্রে নিমন্ত্রিত ব্যক্তিকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
উপজেলার নামদারপুর ফাজিল মাদ্রাসার তহবিল বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত সভাকে কেন্দ্র করে ওই সব আমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল নামদারপুর ফাজিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মাদ্রাসার উন্নয়নে কাল শুক্রবার বিকেলে সভা আহ্বান করেছে। ওই সভায় সাংসদ, উপজেলা পরিষদ, ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীসহ এলাকার ধনাঢ্য ২৮ জনকে বিশেষ অতিথি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব অতিথিকে খুশি করতে ও বাড়তি টাকা আদায়ে ২৮ জনের নামে ভিন্ন ভিন্ন উন্নত মানের আমন্ত্রণপত্র তৈরি করা হয়।
কয়েকটি আমন্ত্রণপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ২৮টি পত্রের প্রতিটিতে তিনজন অতিথির নাম রাখা হয়েছে। প্রধান অতিথি স্থানীয় সাংসদ ও বিশেষ অতিথি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নাম সব কটি পত্রে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ২৮ জনের একেকজনের নাম দিয়ে পৃথক ২৮টি পত্র ছাপা হয়েছে।
কয়েক দিনে ওই সব আমন্ত্রণপত্র অতিথিদের কাছে পৌঁছালে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। ক্ষোভে ফেটে পড়েন অনেক অতিথি।
আমন্ত্রণপত্র ছাপানোর কারখানার মালিক আবদুল আলীম আমন্ত্রণপত্রের ২৮ সংস্করণ করার কথা স্বীকার করে গতকাল বুধবার বলেন, এ আমন্ত্রণপত্র দিয়ে সাময়িকভাবে কাউকে খুশি করা গেলেও এটা একধরনের সূক্ষ্ম প্রতারণা।
উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার চিঠিতেও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পর শুধু আমার নাম লেখা হয়েছে। পরে জানতে পারি, এভাবে ২৮ জনকে আলাদা আলাদা করে বিশেষ অতিথি করা হয়েছে।’
নামদারপুর মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক ও এলাকার কয়েকজন বলেন, মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য অতিথিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বাড়তি টাকা আদায়ের কৌশল হিসেবেই এভাবে পত্র তৈরি করা হয়েছে।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য সৎ। সবাইকে খুশি করতে ও মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের অনুমতি নিয়েই এ কৌশল নেওয়া হয়েছে।’মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সহসভাপতি ফজলুল হক বলেন, ‘আলাদা আলাদা চিঠি করে অতিথিদের সম্মান করা হয়েছে। আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে সবাইকে খুশি করে মাদ্রাসার জন্য অনুদান নেওয়া। কোনো অতিথি যদি এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন, সেটা অতিথির ব্যাপার।’