
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় আশরাফুল ইসলাম নামের এক ইউপি সদস্যকে স্থানীয় সাংসদ রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই টোকেন চৌধুরী ও তাঁর ক্যাডার বাহিনী বেধড়ক পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে টোকেন চৌধুরী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলার আল্লারদর্গা বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
আশরাফুল ইসলাম পিয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আমদহ গ্রাম থেকে পরপর দুইবার নির্বাচিত ইউপি সদস্য। তাঁকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
টোকেন চৌধুরী কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সাংসদ ও দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই।
হাসপাতালে চিকিত্সাধীন আশরাফুল ইসলামের দাবি, তিনি গতকাল রোববার রাতে আল্লারদর্গা বাজারে বসে গল্প করছিলেন। রাত ১০টার দিকে টোকেন চৌধুরীর ছয়জন ক্যাডার মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে তুলে বাজারের পাশে অবস্থিত টোকেন চৌধুরীর নির্যাতন কক্ষে (টর্চার সেল) নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে কিলঘুষি, লাঠি ও চ্যালা কাঠ দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে তাঁর চোখের ওপর রক্ত জমাট বেঁধেছে। তিনি এখন এক কানে কম শুনছেন। এ সময় টোকেন চৌধুরী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রাতেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আশরাফুল ইসলামের অভিযোগ, সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আফাজ উদ্দিনের পক্ষে কাজ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী রেজাউল হক চৌধুরী। নির্বাচনের পর রেজাউলের সঙ্গে দেখা না করায় তাঁর ভাই টোকেন ক্ষিপ্ত হয়ে দলবল নিয়ে তাঁকে মারধর করেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ আফাজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আশরাফুল ইসলামকে রেজাউলের ভাই ও তাঁর ক্যাডার বাহিনী অস্ত্র দিয়ে নির্যাতন করেছে। দৌলতপুরে সন্ত্রাসীর রাজত্ব চলছে। অন্য নেতাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
টোকেন চৌধুরী ইউপি সদস্যকে পেটানোর কথা অস্বীকার করে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এই ইউপি সদস্য (আশরাফুল ইসলাম) আগে এলাকার একটি ধর্ষণের ঘটনার বিচার করেছিলেন। বিচারে ধর্ষণের শিকার এক নারীকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ওই নারীকে টাকা দেননি। টাকা না দেওয়ার ঘটনা নিয়ে গতকাল রোববার রাতে আলোচনা হয়। আজ সোমবার টাকা দেওয়ার কথা ছিল।’ টোকেন চৌধুরীর দাবি, আশরাফুল ইসলাম টাকা ফেরত দেওয়ার ভয়ে অসুস্থতার নাটক করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘এ রকম ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’