বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণাকেন্দ্রে ১৫ প্রজাতির আম ধরেছে। এর মধ্যে বারি আম-৩ ও ৪-এর ফলন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ফলন বেশি ও সুস্বাদু হওয়ায় অনেক চাষি এসব আম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
দুমকিতে অবস্থিত পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণাকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে এখানে অন্তত ২০ প্রজাতির আমের চারা রোপণ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বারি আম-১, ২, ৩, ৪, ৫ ও ৮ এবং গোপালভোগ, মল্লিকা, ল্যাংড়া, ফজলি ও ক্ষীরশাপাত। ২০১৫ সালে এসব গাছে প্রথম আম ধরে।
২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের গবেষণার তথ্যে দেখা গেছে, বারি আম-১ প্রজাতির প্রতিটি গাছে ৬ থেকে ১৯টি আম ধরেছে। বারি আম-২ গাছে ৪৯ থেকে ১০০টি, বারি আম-৩ গাছে ১৮৭ থেকে ৩৯৫টি, বারি আম-৪ গাছে ৪৯ থেকে ৭৯টি আম ধরেছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, পোকামাকড়ের সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য অধিকাংশ আম পলিথিনের কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রটির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রেজাউল করিম গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত।
রেজাউল করিম বলেন, বারি আম-৩ দেশে আমের জগতের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবর্তন। বিদেশ থেকে সংগ্রহ করা এ জাতটি এ দেশে ১৯৯৬ সালে অনুমোদন পায়। আর দীর্ঘদিন চেষ্টা করে সংকরায়ণের মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীল বারি আম-৪ উদ্ভাবন করা হয়েছে। এই দুটি জাতই দেশের সব এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদে উপযোগী। গাছগুলো যত দিন বাঁচবে, তত দিন এসব গাছে আম ধরবে।
গবেষণাকেন্দ্রটির আরেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইফতেখার মাহমুদ বলেন, ২০১১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চারা এনে এখানকার খামারে তাঁরা আমের চাষ শুরু করেন। বর্তমানে খামারের এক হেক্টর জমিতে অন্তত ২০ প্রজাতির আম চাষ হচ্ছে। তবে পরিবেশগত কারণে দক্ষিণাঞ্চলের বারি আম-৩ ও ৪ চাষে কৃষকেরা বেশি সফলতা পাচ্ছেন। কেন্দ্রটি থেকে বিভিন্ন খামারির কাছে কলমযুক্ত চারা বিতরণ করা হচ্ছে। অন্য প্রজাতির আমের চারাও নিচ্ছেন চাষিরা।
গবেষণাকেন্দ্রটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, কেন্দ্রটি থেকে ২০১৬ সালে বারি আম-৩ ও ৪ জাতের প্রায় তিন হাজার কলম দেওয়া হয়েছে। গাছগুলো এখন ছয়-সাত ফুট উচ্চতার হয়েছে। এক বছর বয়সী গাছে আমের মুকুল আসে। তবে চার থেকে পাঁচ বছর বয়সী গাছ থেকে প্রতিবার প্রায় ৩০০টি আম আহরণ করা যায়। একেকটি গাছে বছরে প্রায় ৬০ কেজি পর্যন্ত আম হয়।