সাহসী দুই উদ্ধারকর্মী

ওমরের মৃত্যুর কারণ জানতে চায় পরিবার

ওমর ফারুক
ওমর ফারুক

মাত্র চার মাস আগে বিয়ে। সবেমাত্র সংসার গোছানো শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু সাভারের রানা প্লাজার ভবনধস যেন সংসারটাকেও করে দিয়েছে তছনছ। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি গেলেন না ফেরার দেশে। তিনি ওমর ফারুক ওরফে বাবু। উদ্ধার অভিযানে নেমে অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর নিখোঁজ হয়েছিলেন তিনি। দুদিন পর গত মঙ্গলবার তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁর গলায় রশির দাগ থাকায় মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয় রহস্য। তবে এ মানুষটি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাভারের ভবনধসে আটকে পড়া মানুষদের নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। বলতেন, ‘এত মানুষ বাঁচাব কী করে?’

চার বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে ওমর দ্বিতীয়। ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর সাভারের বিভিন্ন গ্রিল ওয়ার্কশপে চাকরি করে সংসার চালাতেন তিনি। সাভারের দারোগা মার্কেটে নিজেই গ্রিল ওয়ার্কশপের দোকান দেন। কিছুটা স্বাবলম্বী হওয়ার পর চার মাস আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। স্ত্রী ও পরিবারের সঙ্গেই সাভারের রাজ আসন এলাকায় থাকতেন তিনি। 

২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ভবনধসের পর ওমর রড কাটার যন্ত্র নিয়ে নেমে পড়েন ধ্বংসস্তূপে। জীবিতের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি লাশও উদ্ধার করেন তিনি। টানা তিন দিন কাজ করায় একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে ভর্তির পর প্রথমে নিখোঁজ, পরে লাশ উদ্ধার হয় তাঁর। ওই সময় পুলিশ ধারণা করে, গলায় রশির ফাঁসে ওমরের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। শাহবাগ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

ওমরের বোন রহিমা বেগম বলেন, ‘জীবন বাঁচাতে গিয়ে আমার ভাই মরল, সরকারের কেউ তাকে দেখতে আসল না। আমরা তাঁর মৃত্যুর কারণ জানতে চাই।’