Thank you for trying Sticky AMP!!

খালাস চেয়ে হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার আপিল

খালেদা জিয়া

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের সাজা ও অর্থদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিলটি করেন খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী নওশাদ জমির।

পরে নওশাদ জমির প্রথম আলোকে বলেন, আপিলে সাজার রায় বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়াকে খালাসের আরজি জানানো হয়েছে। এতে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করতে, অর্থদণ্ড স্থগিত ও খালেদার জিয়ার জামিনের আরজিও রয়েছে। শিগগিরই আপিল গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য হাইকোর্টে বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।

গত ২৯ অক্টোবর ওই মামলায় রায় ঘোষণা করেন পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান। রায়ে খালেদা জিয়া ছাড়া অপর তিন আসামিকেও সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রত্যেককে দশ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আজ আপিল করলেন খালেদা জিয়া।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, হত্যা, নাশকতা, রাষ্ট্রদ্রোহ, মানহানি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিসহ মোট ৩৪টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় রায় হয়েছে।

২৪টি যুক্তিতে আপিলটি করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী নওশাদ জমির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট একটি ট্রাস্ট, এখানে সরকারের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। কারণ এটি পরিচালিত হয় ১৮৮২ সালের ট্রাস্ট আইন দিয়ে। তাই ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ওই ট্রাস্টে অর্থ দিয়েছেন বিএনপির দলীয় নেতা-কর্মীরা। তাই এখানে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ নেই, কেননা আইনের ৫(২) ধারা অনুসারে ক্ষমতার অপব্যবহার হয়েছে বলে খালেদা জিয়াকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই সাজা বাতিল চাওয়া হয়েছে। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন খালেদা জিয়া। এই আপিল মোকাবিলায় আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছি।’

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অপর তিন আসামি হলেন, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের ব্যক্তিগত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও বিএনপির নেতা সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ব্যক্তিগত সহকারী সচিব মনিরুল ইসলাম। এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী পলাতক। অপর দুই আসামি জিয়াউল ও মনিরুল কারাগারে আছেন।

এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হন খালেদা জিয়া। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় রায় দেন বিচারিক আদালত। বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এর বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন, যার ওপর শুনানি নিয়ে গত ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায়ের দিন অর্থাৎ গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতে নির্দেশনা চেয়ে এর আগে খালেদা জিয়ার করা রিট গত ৪ অক্টোবর কিছু নির্দেশনা ও পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশের পর চিকিৎসার জন্য ৬ অক্টোবর তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়। প্রায় এক মাস চিকিৎসার পর ৮ নভেম্বর বিএসএমএমইউ থেকে খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।