Thank you for trying Sticky AMP!!

গ্রামবাসী নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে বানালেন রাস্তা

স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা তৈরির কাজে হাত লাগায় নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার মণিপুর ও হরিতকীডাঙ্গা গ্রামের ছেলে-বুড়ো সবাই। ছবি: প্রথম আলো

মাত্র দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দপ্তরে বারবার ধরনা দিয়েছেন গ্রামবাসী। সবাই রাস্তা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদায় করেছেন। প্রতিশ্রুতি আর কেউ রক্ষা করেননি। শেষে এলাকাবাসী নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে রাস্তাটি বানিয়েছেন। এ রাস্তা বানিয়েছেন নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিতকীডাঙ্গা ও মণিপুর গ্রামের বাসিন্দারা।

সরকারি বরাদ্দের আশায় বসে না থেকে গতকাল সোমবার সকাল থেকে হরিতকীডাঙ্গা ও মণিপুর গ্রামের বাসিন্দারা এক জোট হয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে ভেতর দিয়ে রাস্তা তৈরি করতে শুরু করেন তাঁরা। এ রাস্তা নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান, ইউপি সদস্য রেহেনা পারভীন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। পরে হরিতকীডাঙ্গা ও মণিপুর গ্রামের কয়েক শ মানুষ কোদালসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে রাস্তার নির্মাণকাজে নেমে পড়েন। রাস্তা নির্মাণের জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করা গ্রামবাসীর জন্য ভোজের আয়োজন করা হয়।

হরিতকীডাঙ্গা ও মণিপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, রাস্তাটি নির্মাণের জন্য এলাকার লোকজন চেয়ারম্যান, সাংসদ ও সরকারি দপ্তরে বহুবার আবেদন করেছেন। ভোটের সময় আশ্বাস মিললেও পরে আর কেউ খোঁজ নেননি। অবশেষে গ্রামের লোকজন সরকারি অনুদান ও বরাদ্দের আশায় না থেকে নিজেরাই রাস্তা নির্মাণ করতে শুরু করেছেন।

রাস্তাটি তৈরির অন্যতম উদ্যোক্তা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক দেওয়ান হালিমুজ্জামান বলেন, ‘মণিপুর থেকে হরিতকীডাঙ্গা বাজারের দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। এ বাজারে ইউপি কার্যালয়, একটি প্রাথমিক ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ ছাড়া এ বাজারের পাশ দিয়ে চলে গেছে ধামইরহাট-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়ক। জয়পুরহাট বা ধামইরহাট উপজেলা সদরে যাওয়ার জন্য আশপাশের লোকজনকে হরিতকীডাঙ্গা বাজারে আসতে হয়। কিন্তু এত দিন রাস্তা না থাকায় মণিপুর, কড়ইডাঙ্গা, রামরামপুরসহ ছয়-সাতটি গ্রামের লোকজনকে অতিরিক্ত চার কিলোমিটার পথ ঘুরে হরিতকীডাঙ্গা বাজারে আসতে হতো।’

হরিতকীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া সুলতানা বলে, ‘রাস্তা না থাকায় এত দিন বাড়ি থেকে চার কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরে আমাদের স্কুলে যেতে হতো। পায়ে হেঁটে গেলে স্কুলে যাওয়া-আসা করতেই দেড়-দুই ঘণ্টা সময় চলে যায়। কিন্তু এখন মাত্র দেড় কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই স্কুলে পৌঁছে যাব।’

মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য রাস্তাটি তৈরিতে মণিপুর, হরিতকীডাঙ্গা, কড়ইডাঙ্গা, রামরামপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ বিভিন্ন পরিমাণে জমি দান করেছেন।

ধামইরহাট সদর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বলেন, ইউপির বরাদ্দ থেকে চাহিদামাফিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করা সম্ভব হয় না। তাই, মণিপুর, হরিতকীডাঙ্গা, কড়ইডাঙ্গা ও রামরামপুর গ্রামের মানুষের দাবি সময়মতো পূরণ করা সম্ভব হয়নি।