
ড্রাম ও গামলাভর্তি পানি নিয়ে প্রস্তুত তরুণ-তরুণীরা। মধ্যখানে বাঁশের বেষ্টনী। সাউন্ড সিস্টেমে মারমা ভাষার গান বেজে উঠতেই শুরু হয় একে অপরের দিকে পানি ছুড়ে মারার লড়াই। কাকভেজা না হওয়া পর্যন্ত চলে এ লড়াই। বিগত বছরের পাপ ও কালিমা মোচন করে নতুন বছরকে আবাহন করার জন্যই মারমা তরুণ-তরুণীদের এই আয়োজন।
মারমা নববর্ষ ১৩৭৮ সালকে বরণ ও ১৩৭৭ সালকে বিদায় জানাতে চট্টগ্রাম নগরে প্রথমবারের মতো গতকাল শুক্রবার জলকেলি উৎসবের আয়োজন করা হয়। চান্দগাঁওয়ের সিঅ্যান্ডবি এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ উৎসবের আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর মারমা যুব সংঘ। ১৩ এপ্রিল থেকে শুরু হয় নতুন মারমা বছর। কিন্তু ওই সময় অনেকের ব্যস্ততা ছিল চাকরি নিয়ে, আবার অনেকেই ছিলেন গ্রামের বাড়িতে। তাই ১৩ এপ্রিলের পরিবর্তে গতকাল এ উৎসবের আয়োজন করা হয় বলে জানান আয়োজকেরা।
চট্টগ্রামে বসবাসরত বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং পেশাজীবীরা জলকেলি উৎসবে অংশ নেন। দুই দলের স্নান শেষে অপর দুটি দল এসে যোগ দেয় জলকেলিতে। এভাবে গতকাল সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিরামহীনভাবে চলে এ উৎসব। এ ছাড়া বুদ্ধস্নানও করানো হয়। জলকেলি উৎসব শেষে তরুণ-তরুণীরা তাঁদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করেন।
মারমা যুব সংঘের যুগ্ম আহ্বায়ক চাইলা মং মারমা প্রথম আলোকে বলেন, পুরোনো বছরের সব পাপ ও গ্লানি মুছে নতুন বছরকে বরণ এবং মানুষের মঙ্গল ও বিশ্ব শান্তি কামনা করা হয়েছে উৎসবে। ভেদাভেদ ভুলে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশা পূরণ হয় উৎসবে।
উৎসবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য থোয়াইচি মারমা, অং সুইপ্রু চৌধুরী ও রেম্রাচাই চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন মারমা যুব সংঘের আহ্বায়ক আচাইপ্রু মারমা। উৎসবের দ্বতীয় পর্বে মারমা শিল্পীদের অংশগ্রহণে কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়।